পুরোনো খাল সংস্কার করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজধানী ঢাকায় নতুন খাল খনন, পুরোনো খাল সংস্কার, জলাধার সংরক্ষণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে বিভাগীয় সদরগুলোয় ভূ-উপরিস্থ নিরাপদ পানি সরবরাহের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিন দিনব্যাপী ‘ওয়াটার সামিট-২০১৭’-এর উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসডিজি’র নির্ধারিত সময়সীমা ২০৩০ সালের আগেই আমরা শতভাগ মানুষকে নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে চাই। ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০২১ সালের মধ্যেই সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে পারব।’
জাতিসংঘের পানি ও স্যানিটেশন-বিষয়ক বিশেষ প্যানেলের সদস্য শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পাঞ্চল, বসতি স্থাপনসহ সব এলাকার জলাধার সৃষ্টি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং বর্জ্য ও দূষিত পানি নিষ্কাশন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নাব্যতা হ্রাস প্রতিরোধে দেশে নদ-নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনায় সরকার গৃহীত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: ১৯৯৯ সালে জাতীয় পানিনীতি প্রণয়ন। ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ অ্যাক্ট-১৯৯৬ প্রণয়ন, ন্যাশনাল ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন অ্যাক্ট-২০১৪ প্রণয়ন এবং আর্সেনিক সমস্যা মোকাবিলায় ‘ন্যাশনাল পলিসি ফর আর্সেনিক মিটিগেশন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান’ (এনএএমআইপি) প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার জনগণের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই বিশেষ সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। এমডিজির লক্ষ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে ৮৪ শতাংশ লোকের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। ২০১৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে ৯৮ ভাগ মানুষ নিরাপদ পানি পাচ্ছে।’
দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার আওতায় এসেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত পয়োনিষ্কাশনের আওতায় এসেছে ৬১ শতাংশ। উন্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগের পরিমাণ গত ৮ বছরে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়ে বর্তমানে ১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ২০০৩ সালেও এর পরিমাণ ছিল ৪২ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শতবর্ষের ডেল্টা পরিকল্পনায় ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও পানির বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এতে সমতল, পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকাগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনার আওতায় নেওয়া হয়েছে। আমাদের উন্নয়ন সহযোগী ১২টি দেশের সহযোগিতায় ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ