ডিমের ডঙ্কা দামেই বাজছে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাজারে ডিমের চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। রমজানের আগে থেকে চাহিদা কমে গেছে বলে জানান তাঁরা। কোরবানির ঈদের আগে ও পরে চাহিদা কমে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। খামারিরা বলছেন, তাঁরা উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না। কিন্তু রাজধানীতে ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছে।
বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন। গাজীপুরের শ্রীপুরে তাঁর মুরগির খামারে ডিম উৎপাদন করেন তিনি। মহসিন বলেন, ফার্মের মুরগির সাদা ডিম আজ মঙ্গলবার ১০০টি ৫৭৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা ৪৫ পয়সা হলেও বিক্রি করছেন ৫ টাকা ৭৫ পয়সা। লাল ডিম ১০০টির দাম ৬৫৫ টাকা। সেই দামে এই মুরগির ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা। তিনি বলেন, রমজানের দুই মাস আগে থেকে ডিমের দাম কমে যায়। সে সময় প্রতিটি ডিম পাইকারি বাজারে তিন টাকা করে বিক্রি করতে হয়েছ। ওই সময় খামারিরা লোকসানের ভয়ে ডিম পাড়া মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন। রাস্তায় ডিম ভেঙে প্রতিবাদ করেছেন। মূলত, রোজার মাসে বেকারি ও স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। তাই ডিমের চাহিদা কমে যায়। এ জন্য দাম কমে যায়। কোরবানি ঈদেও ডিমের দাম কমে যাবে। মানুষ এ সময় গরু-খাসির মাংস খাবে। কিন্তু রাজধানীতে বা ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমেনি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খোলা দোকানে ফার্মের মুরগির ডিম ১২টি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। বিক্রেতা শাহাব উদ্দিন বলেন, এসব ডিম ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে আসছে। তিনি তেজগাঁও ডিমের আড়ত থেকে ডিম এনে বিক্রি করেন। ধানমন্ডি এলাকার মুদি দোকানে মো. মামুন নামের এক বিক্রেতা এক হালি ডিম বিক্রি করছেন ৩৪ টাকা। সে অনুপাতে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে সাড়ে আট টাকা।
রাজধানীর সুপারশপ আগোরার রাইফেল স্কয়ার শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিম বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন প্যারাগন ওমেগা থ্রি প্লাস ব্র্যান্ডের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২১৫ টাকা, রহমানিয়া অর্গানিক ডিম ১৮৫ টাকা, পূর্ণভা গুড ফুড ভিটামিন ই ব্র্যান্ডের ডিম ১৬০ টাকা, ব্রাউন প্রিমিয়াম ডিম ১৩৫ টাকা, সিপি ১৩৫, কাজী ফার্মের ডিম ১৪০ টাকা কান্ট্রি ন্যাচারাল ডিম ১৪০, শিশুদের প্যারাগন কিডস ছয়টি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বপ্ন সুপারশপে কাজী ফার্মের ডিম এক ডজন ১৪০ টাকা, সিপি ১৩৫ টাকা, পূর্ণভা ওমেগা থ্রি ২১৫ টাকা, পূর্ণভা সমৃদ্ধ ভিটামিন ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গ্রিন রোডের স্বপ্ন সুপারশপে ডিম কিনছিলেন ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, দুই মাস ধরে তিনি সুপারশপে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অর্গানিক ডিম কিনছেন। তিনি বললেন, ‘বাজারের প্রচলিত ডিমের থেকে এখানের ডিমের দাম বেশি। তাও এখান থেকে কিনছি। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারলাম, এসব ডিম যত্ন নিয়ে উৎপাদিত হয়। মুরগিকেও মানসম্পন্ন খাবার খাওয়ানো হয়। তাই এই ডিম কিনছি।’
মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেন সিটির আগোরা সুপারশপ থেকে ডিম কেনেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, অনেকে বেশি লাভের আশায় মুরগিকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবার খাওয়ায়, যা ডিমের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রামিত হতে পারে।’
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিম সম্পর্কে জানতে চাইলে আগোরা সুপারশপের ক্যাটাগরি ম্যানেজার আবু সাঈদ মাহমুদ বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান মুরগির আলাদা যত্ন নেয়, প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ায়, আমরা সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিম কিনছি।’