ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিন ক্লাস বন্ধ

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: আইন বিভাগের এক শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির নোটিশের জের ধরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভসহ চলমান পরিস্থিতিতে আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে যেসব পরীক্ষা চলমান রয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া চলমান সংকট সমাধানে অধ্যাপক আ ফ ম ইউসূফ হায়দার, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামসহ পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই কমিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অধ্যাপক আফসান চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাজদিন হাসান ও ছাত্র প্রতিনিধি। কমিটি ৩০ জুলাই সংঘটিত ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও সত্য উদ্‌ঘাটন করবে। এ ছাড়া শিক্ষক ফারহান উদ্দিন আহমেদের চুক্তি শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক নীতিমালা ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান নীতিমালা ও নির্দেশিকায় পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হলে কমিটি তা পেশ করবে। ৩ আগস্ট থেকে এই অনুসন্ধান কার্যক্রম চলবে।

এদিকে, আজ চতুর্থ দিনে গড়াল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ সকাল ৯টা থেকে মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসের সামনে ও পাশের সড়কে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে এবং প্রতিবাদ শুরু করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন সড়কে বসে পড়ে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা নানা স্লোগান দিতে থাকে। বেলা তিনটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি হয়।

আজকের বিক্ষোভে ল’ অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশন অব ব্র্যাকের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এক অ্যালমনাই সদস্য অভিযোগ করেন, ‘রেজিস্ট্রারের কারণেই এই ঝামেলা হচ্ছে। তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। তদন্ত কমিটি যেটা করা হয়েছে, সেটা নিরপেক্ষ নয়। আর কমিটি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এই ঘটনায় সব প্রমাণ আছে। এই প্রতিবেদন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে।’ আইন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, উপাচার্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, তা তাঁরা মানেন না। এই কমিটিতে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীসহ নিরপেক্ষ সদস্য রাখতে হবে। এসব বিষয়ে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।

চলমান পরিস্থিতিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রেজিস্ট্রারের কারণে গত এক বছরে বেশ কয়েকজন শিক্ষক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। এই রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাই আমরা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ফারহান উদ্দিন আহমেদকে ৩০ জুলাই মানবসম্পদ বিভাগ থেকে চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকৃতি জানালে রেজিস্ট্রার বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা তাঁর আইডি কার্ড নিয়ে নেন এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ শুরু হয়। তখন থেকে আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ