করিডর দিয়ে গরু আসতে বাধা নেই: বিজিবি মহাপরিচালক
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে বৈধ পথে গরু আসতে বাধা নেই। তবে কোনোভাবেই সীমান্ত পার হয়ে রাখালদের গরু আনতে পাঠানো যাবে না বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
আজ বুধবার দুপুরে পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ড ও সফলতার বিষয়গুলো তুলে ধরতে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। বিজিবিতে হেলিকপ্টার সংযোজন করে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বিজিবিতে ১৫ হাজার লোকবল বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও বলেন তিনি।
মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ স্পর্শকাতর এলাকা। অস্ত্র আসার কিছু কিছু মৌসুম আছে। নির্বাচন তেমন একটা সময়। এ সময় অস্ত্র কেনাবেচা হয়। অস্ত্র যেন আসতে না পারে, সে জন্য কড়া প্রহরা দেওয়া হচ্ছে।’
মাদক প্রসঙ্গে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, মাদকের গডফাদার কারা, এ তালিকা তাঁদের কাছে নেই। এ তালিকা আছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে। বিজিবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।
বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আদালতের। তবে আমরা সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’
গরু আসার জন্য নতুন করিডর খুলতে বলা হয়েছে জানিয়ে মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘সীমান্তে গরুর অনেক করিডর আছে। অনেকগুলো বন্ধ করছি। কিছু চালু আছে। যেগুলো ভালো চলে, বন্ধ করিনি। গরু আসুক, কোনো সমস্যা নেই। ইন্ডিয়াতে একটা সমস্যা আছে যে, বুড়ো গরু দিয়ে কী হবে! ওরাই পাগল হবে গরু পাঠানোর জন্য। আমি আসার পর রিজিওন ও সেক্টর কমান্ডারদের বলেছি করিডরে রাখালদের প্রোভাইড করেন। যাঁরা ব্যবসা করেন, গন্ডগোল না, মিলেমিশে করেন। রাখালেরা জিরো লাইনে যাক। ওরা জিরো লাইনে আসুক। সেখান থেকে গরু নিয়ে আসুক।’
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভারত থেকে গরু আসায় অসুবিধা হবে না, উল্লেখ করে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করেছি, স্থানীয় প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করেছি, যাঁরা এসব ব্যবসায় সম্পৃক্ত, তাঁদের সম্পৃক্ত করেছি। রাখালদের রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এনে সম্পৃক্ত করেছি। ওপারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এপারের ব্যবসায়ীরা যেন সম্পৃক্ত থাকে, আমরাই সুবিধাগুলো তাঁদের দিচ্ছি। তবে সতর্ক করে দিয়েছি, কোনো গন্ডগোল যেন না হয়। কোনো রাখাল (যদি) মারা যায় বাধ্য হব (করিডর) বন্ধ করে দিতে। দোয়া করেন বাংলাদেশের কোনো একজন নাগরিক যেন মারা না যায়। এটার মূল্য অনেক বেশি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, দেশে ঈদের সময় গরু আসা বন্ধ করে দিলে অসুবিধা হবে। কারণ এত সংখ্যায় উৎপাদন করা যাবে না। বরং সবার অসুবিধা হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে দেশে কোরবানি উপযোগী যথেষ্ট গরু থাকার বিষয়টি জানালে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, এই হিসাব নেই। তবে সরকার যদি মনে করে যে এ রকম আছে, তাহলে বন্ধ করা হবে। ক্রেতারা দেশি গরুই কিনবে। ভারতের বুড়ো গরু কেউ কিনবে না।
তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আইনুল হক বলেন, ২০১৬ সালে ৪৪ লাখ গরু কোরবানি করা হয়। এবার এর চেয়ে বেশিসংখ্যক গরু দেশের অভ্যন্তর থেকে জোগান আসবে। তাই ভারতীয় গরু এলে এ দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।