প্রহরীর গলা কেটে ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) তিস্তা শাখায় ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতের যেকোনো নিরাপত্তা প্রহরী আবদুর রশিদকে (৫৭) গলা কেটে হত্যার পর ওই ডাকাতির চেষ্টা করা হয়।
আবদুর রশিদ লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও রাকাব তিস্তা শাখা সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ব্যাংকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ধনতি রানি (৪৮) ঝাড়ু দেওয়ার জন্য ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংকের কলাপসিবল গেট ও শাটার খোলা পান। তিনি আবদুর রশিদের নাম ধরে ডাকেন। তাঁর সাড়া না পেয়ে ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে একটি টেবিলের ওপর শোয়ানো অবস্থায় আবদুর রশিদের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। এ সময় তিনি চিৎকার করে বাইরে এসে সবাইকে ঘটনা জানান। খবর পেয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারী, পুলিশ, র্যাব, পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
বুধবার দুপুর ১২টায় রাকাব তিস্তা শাখায় গিয়ে দেখা যায়, ভল্টের পাশের দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। ব্যাংকের ভেতরে পিবিআই এবং সিআইডির কর্মকর্তারা ঘটনার বিভিন্ন আলামতের ছবি তুলছেন। ব্যাংকের ভেতরে একটি বড় কাঠের টেবিলের ওপরে জমাট বাঁধা রক্ত রয়েছে।
রাকাব তিস্তা শাখার ব্যবস্থাপক আবু রুহেল মো. ওয়েছ আল কুরনী বেলন, বুধবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে মুঠোফোনে ঘটনার সংবাদ পেয়ে ব্যাংকে আসেন। দেখেন নিরাপত্তা প্রহরী আবদুর রশিদকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকের স্ট্রং রুমের (ভল্টের) ডান দিকের দেয়ালের একটা ইট খোলা হয়েছে। আরও একটি খোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংকের সব কটি ডেস্কের ড্রয়ার এবং ১৪-১৫টি স্টিলের আলমারির লক ভেঙে খোলা হয়েছে। চেয়ার, টেবিল সব এলোমেলো। তবে টাকাপয়সা খোয়া গেছে কি না, সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
আবদুর রশিদের লাশ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আজ বুধবার বিকেলে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এ ঘটনায় রাকাব তিস্তা শাখার পক্ষ থেকে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, বুধবার দুপুরে আবদুর রশিদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর দুই মেয়েসহ আত্মীয়স্বজনেরা আহাজারি করছেন। অন্য একটি কক্ষে তাঁর স্ত্রী মাহমুদা বেগমের মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। আবদুর রশিদের বড় ছেলে খুনিয়াগাছ এমদাদুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাসুম মিয়া বলেন, ‘আমার বাবার কোনো শত্রু আছে বলে জানা নেই। আমার বাবাকে হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাবার জন্য রাতের খাবার নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম না যে সেটাই আমার বাবার সঙ্গে শেষ দেখা।’
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, এ ঘটনার সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।