যানবাহন কালো ধোঁয়া ছেড়েই যাচ্ছে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ‘মিরপুর লিংক’ নামের একটি বাস সোবহানবাগে থামতেই চারদিক কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেল। যতক্ষণ লোকজন ওঠা-নামা করল আশপাশের পথচারীরা বাধ্য হলো নাকে হাত চেপে চলতে। এ দৃশ্য সোমবার দুপুরের।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো ধোঁয়া ছাড়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রাজধানীর অনেক যানবাহনই কালো ধোঁয়া নির্গত করছে।
মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কোনো ধোঁয়া নির্গত হলে তা ২০০ টাকা জরিমানাসহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধোঁয়ার ফলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। শিশুদের জন্যও ক্ষতিকর।
গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা যায়, যানবাহনের মধ্যে বাস থেকে কালো ধোঁয়া বেশি নির্গত হয়। এর মধ্যে পুরোনো ও লক্কড়ঝক্কড় বাস থেকে হয় বেশি। মিরপুর রোডে চলাচলকারী বিকাশ, ভিআইপি, বাহনসহ বেশ কিছু বাসে এ অবস্থা দেখা যায়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সোমবার বিকাশ পরিবহনের চালককে ধোঁয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘এগুলা মালিকে জানে। আমার কাজ বাস চালানো।’
বাস ছাড়া লেগুনা, ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাসও এ তালিকায় আছে। সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজার এলাকায় কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে মতিঝিলগামী নিউ ভিশন, দিশারি, বিকল্পসহ অনেক বাস থেকেই কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। সার্ক ফোয়ারা মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষারত নুসরাত সাদিয়া মুখে মাস্ক পরে কপাল কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছেন। ধোঁয়ার কথা বলতেই বিরক্তি নিয়ে বলেন, ‘এমনিতেই ঢাকার বাতাস খুব খারাপ। এর ওপর প্রতিদিন এই ধোঁয়া খেতে হচ্ছে। ইনহেলার সব সময় সঙ্গে রাখি। অ্যাজমা নিয়ে এই শহরে থাকা কঠিন।’
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর বলেন, ‘এসব গাড়ির পেট্রোলিয়াম আংশিক জ্বলে। ফলে বাতাসে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়। মূলত সিসা-জাতীয় পদার্থ, যেটা শ্বাসতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।’
তিনি আরও বলেন, এ ধোঁয়ার প্রভাব সরাসরি শিশুদের ওপর পড়ে। মানসিক বিকাশে সমস্যা হয়। এ ছাড়া কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইডও ছড়ায়। এতে অ্যাজমা হতে পারে এবং ফুসফুসের ক্ষতি করে। তিনি আরও যোগ করেন, রাস্তায় যাদের দীর্ঘ সময় থাকা হয় অর্থাৎ ট্রাফিক পুলিশ, পরিবহনশ্রমিক ও রাস্তার পাশের দোকানি, তাঁদের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের সহকারী কমিশনার আকরাম হাসান বলেন, মামলা ও জরিমানা নিয়মিতই হয়। বেশি সমস্যা দেখলে ডাম্পিংয়ে পাঠান। তবে বললেন, কালো ধোঁয়ার বিষয়টি তাঁরা নজরে রাখবেন।