আইয়ুবেরই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি : কৃষিমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা ষড়যন্ত্র ও খেলা চলছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, বায়না ধরতে পারেন। সুখস্বপ্ন দেখতে পারেন। আইয়ুব খানেরই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি, আপনি তো কোন ছার। সব ষড়যন্ত্র ভেদ করে বঙ্গবন্ধুকন্যার রথ এগিয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘কারাগারের রোজনামচা’র ওপর বক্তৃতামালা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন। তবে তিনি তাঁর বক্তব্যে ষড়যন্ত্রকারী কারা, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ডায়েরির গ্রন্থরূপ ‘কারাগারের রোজনামচা’। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ কাল পর্বের কারাস্মৃতি এ গ্রন্থটিতে স্থান পেয়েছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে এবং পুলিশের বিশেষ শাখার সহায়তায় উদ্ধার করা ডায়েরির গ্রন্থরূপ দিয়ে বইটি প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মতিয়া চৌধুরী ফিরে যান ১৯৬৬ সালে। তিনি বলেন, সে বছরের ৭ জুন ছয় দফাকে কেন্দ্র করে হরতাল হয়। ৯ জুন কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলারের সামনে বসা অবস্থায় মাথার পেছন দিক থেকে কারও হাতের স্পর্শ পান তিনি। ফিরে দেখেন বঙ্গবন্ধু দাঁড়িয়ে আছেন। তখন বঙ্গবন্ধু তাঁকে বলেন, ‘তুমি এসেছ, ভয় নেই। চিন্তা কোরো না। আমার ধারণাই ছিল না তখন বঙ্গবন্ধুর দেখা পাব।’
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সচেতনতা, ব্যক্তি মুজিব, পিতা, স্বামী, শুভাকাঙ্ক্ষী বঙ্গবন্ধুকে বোঝার জন্য ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি পড়া সবার জন্য অপরিহার্য। কারাগারে রোল করা খাতা পৌঁছে দেওয়া, তারপর লেখাগুলো সংরক্ষণে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ভূমিকা, শেখ হাসিনার সম্পাদনায় বইটি প্রকাশসহ উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, বইটিতে বঙ্গবন্ধু কয়েদিদের নিয়ে লিখেছেন। খন্দকার মোশতাকের প্রতিও সহানুভূতির কথা প্রকাশ পেয়েছে বইতে। বঙ্গবন্ধু মোশতাককে বন্ধু বলে ভেবেছিলেন, কিন্তু সেই তিনিই বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি বলেন, ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি শুধু সে সময়ের কথা বলে না, আজকের কথাও বলে। তিনি তখনকার মতো এখনো বিশ্বাসঘাতকদের বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান বলেন, শোকের মাসে কাঙালি ভোজের আয়োজনসহ নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এই করেই বঙ্গবন্ধুচর্চা শেষ হয়ে যাবে? বঙ্গবন্ধু যে ত্যাগ করেছেন, সে ঋণ কখনো শোধ করা যাবে না। তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। নিজেদের জীবনের প্রতিটি কর্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি থেকে বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকেরা। বইটির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক চিকিৎসক।