চাপ এবার স্মিথদের ওপর
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: আহা, ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে স্টিভ স্মিথ আর কাল ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে স্টিভ স্মিথের দুটি ছবি যদি পাশাপাশি তুলে রাখা যেত!
আলো-আঁধারে, গতিতে-জড়তায় যেমন তফাত; ছবি দুটিতেও পার্থক্যটা তেমনই হতো। প্রথম দিনের স্মিথ হাস্যোজ্জ্বল, চোখে-মুখে-কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক। আর কাল সংবাদ সম্মেলনের স্মিথ যেন টুপির আড়ালে চোখ ঢেকে ফেলতে পারলেই বাঁচেন। প্রথম দিনের স্মিথ ‘বাংলাদেশ সিরিজটা ২-০-তে জিততে চায়’ শুনে ‘আগের ১০০ টেস্টের ৯টি জেতা দলের জন্য এটি অতি আত্মবিশ্বাসী লক্ষ্য’ বলে খোঁচা দিয়েছিলেন, কাল সেই স্মিথই মিনমিনে সুরে বলে গেলেন, চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে তাঁরাই থাকবেন চাপে।
সংবাদ সম্মেলন শেষই হলো চাপের প্রশ্নটা দিয়ে। সিরিজ জয়ের সুযোগ নেই অস্ট্রেলিয়ার। হয় বাংলাদেশ ১-০ বা ২-০-তে জিতবে, নতুবা তা ড্র হবে ১-১-এ। চাপটা কার ওপর বেশি থাকবে, তা তো জানাই। স্মিথও মেনে নিলেন, ‘দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০-তে পিছিয়ে আছি। চট্টগ্রামে ভালো খেলে সিরিজ ড্র করার চাপ থাকবে।’ সিরিজে হারলে র্যাঙ্কিংয়ে ৫-৬ নম্বরে নেমে যাবে অস্ট্রেলিয়া। আর এটিকে ধরেই এক অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, অস্ট্রেলিয়ার এই দলটার কি ওই ৫-৬-এর চেয়ে বেশি কিছু প্রাপ্য! প্রশ্ন তো নয়, কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা আসলে। ‘কঠিন প্রশ্ন’, ‘দল তরুণ’, ‘ধীরে ধীরে শিখব’—বলে জবাব দিলেন স্মিথ। কিন্তু প্রশ্নটা শুনেই তো চমকে যেতে হয়। প্রশ্নটা অস্ট্রেলিয়াকেই কি করা হলো?
এমন নয়, ম্যাচটা বাজেভাবে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। বরং শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা ছিল। একটু এদিক-ওদিক হলেই ম্যাচের ফল উল্টে যেতে পারত। তবে স্মিথের বিশ্লেষণে হারের পেছনে দায়টা তাঁর ও ডেভিড ওয়ার্নারেরই, ‘আমার ও ডেভির (ওয়ার্নার) শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচ শেষ করে আসা উচিত ছিল। ২ উইকেটে ১৬০-এর মতো (১৫৮) করে ফেলেছিলাম। কিন্তু এরপর ৮৬ রানে ৮ উইকেট হারালাম।’
যদিও শেষ ঘণ্টা তিনেকের ওই ধস নয়, স্মিথের চোখে ম্যাচের মূল পার্থক্যটা দুই দলের প্রথম ইনিংসে। নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সাকিব-তামিমের ১৫৫ রানের জুটি! বললেন, ‘প্রথম ইনিংসে ওদের ২৬০ রান, আর সাকিব-তামিমের ওই জুটিই ওদের পথ দেখিয়েছে। ওদের প্রথম ইনিংসে ১৮০-২০০ হলেই ভালো হতো। তারপর আমরাও প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করিনি।’
স্মিথের দল হেরেছে, এটা বাস্তবতা। তবে একটা জায়গায় স্মিথ যোগ্য চ্যাম্পিয়ন। হার মানা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের মুখে ঝরল বাংলাদেশের প্রশংসা, ‘ওরা ভয়ংকর দল, বিশেষ করে ঘরের মাটিতে। আমাদের হারাল, খুব বেশি দিন হয়নি ইংল্যান্ডকেও হারিয়েছে।’ আলাদা করে বললেন সাকিব-তামিমের কথা, ‘টপ অর্ডারে তামিম আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছে। আর সাকিব প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাট করেছে, দুই ইনিংসেই ভালো বোলিং করেছে। ও যে লেংথে বল করে সেটা দুর্দান্ত।’ অভিযোগ নেই তাঁর সিরিজ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না-পারা নিয়েও, ‘ওটাকে অজুহাত হিসেবে দেখাব না। নেট প্র্যাকটিসে দারুণ সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি।’