ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলছে ধীরে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে যানবাহন চলাচল করছে ধীর গতিতে। কখনো কখনো একেবারেই থেমে যাচ্ছে। গত রাতে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এই মহাসড়কে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ক্যাডেট কলেজ এলাকা থেকে জামুর্কী পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকায় নির্বিঘ্নে যানবাহন চলছে।
গাজীপুর পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এতে রাত থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়। চন্দ্রা থেকে গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পরে। তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে যানবাহনের চাপ কমতে থাকায় চন্দ্রা ও এর আশপাশ এলাকায় যানবাহন চলাচল করতে ধীর গতিতে। এখনো বিপুলসংখ্যক যাত্রী স্টেশনগুলোতে অপেক্ষা করছেন। পর্যাপ্ত গাড়ি না পেয়ে ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে ও বাসের ছাদে করে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হাসান জামিল (ছদ্মনাম) বলেন, তিনি রাজধানীর ইস্কাটন থেকে নিজ গাড়িতে ভোর ছয়টায় রওনা দিয়েছেন গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সকাল নয়টায়ও চন্দ্রা মোড় পার হতে পারেননি। চন্দ্রা মোড়ে বাস থামিয়ে বিশৃঙ্খলভাবে যাত্রী তোলা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ ব্যবস্থাপনা একেবারেই নেই।
কোনাবাড়ী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হোসেন সরকার জানান, চন্দ্রা এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় সেখানে ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। তবে দীর্ঘ যানজট নেই বললেই চলে।
গাজীপুরের নাওজোড় হাইওয়ে ওসি আব্দুল হাই জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ভোগড়া এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হলেও পুলিশ তা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।
এদিকে প্রতি বছর ঈদের আগের দিন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে ব্যাপক যানজট হলেও আজ শুক্রবার পরিস্থিতি ভিন্ন। মির্জাপুরের গোড়াই ক্যাডেট কলেজ এলাকা থেকে জামুর্কী পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার এলাকায় নির্বিঘ্নে যানবাহন চলছে। পুলিশ বলছে, যানবাহনের প্রচুর চাপের কারণে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে আসা যানবাহনকে কালিয়াকৈর উপজেলার শিলাবৃষ্টি ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত সামাল দিতে কষ্ট হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে যানবাহনের প্রচুর চাপ। ঢাকাগামী যানবাহন কিছুটা কম থাকলেও টাঙ্গাইল হয়ে উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনের সংখ্যা প্রচুর। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ঢাকা শহরে চলাচলকারী বিআরটিসির দোতলা বাস ছাড়াও বিভিন্ন যানবাহন এই সড়কে দিয়ে যাচ্ছে। পশু বহনকারী কোনো ট্রাক চোখে পড়েনি।
বাইপাইল থেকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীগামী মোটরসাইকেল চালক সোহেল মিয়া জানান, যানজটের ভয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি বের হয়েছেন বাড়ি যেতে। তবে কালিয়াকৈর এর পর রাস্তায় স্বাভাবিকভাবে যান চলছে দেখে খুশি লাগছে।
দিনাজপুরগামী ট্রাকচালক কালাম মিয়া জানান, চন্দ্রা থেকে কালিয়াকৈর পাড়ি দিতে ৫-৭ মিনিটের রাস্তায় প্রায় ৩৫-৪০ মিনিট সময় লেগেছে। এরপর মোটামুটি ভালোভাবেই রাস্তা পাড়ি দিচ্ছেন।
মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম কিবরিয়া জানান, চন্দ্রা থেকে কালিয়াকৈর শিলাবৃষ্টি ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত যানবাহন চার থেকে পাঁচ লাইন করে উত্তরাঞ্চলের দিকে যাচ্ছে। চালকেরা নিয়ম না মেনে যান চালাচ্ছেন। বিষয়টি সামাল দিতে কষ্ট হচ্ছে। তবে মির্জাপুরের সীমানায় যানবাহনের গতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ও ভোগড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যানবাহনের ধীর গতি রয়েছে।