চট্টগ্রাম নগরে বিকেলেই বর্জ্য অনেকটা সাফ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: চট্টগ্রাম নগরের প্রায় সব এলাকা থেকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন শনিবার বিকেলের মধ্যেই কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবর্জনা অপসারণে সিটি করপোরেশনের তৎপরতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী, দাবি করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
শনিবার দুপুর থেকে বিকেলে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বর্জ্য অপসারণের সত্যতা পাওয়া গেছে। এবার বিকেল পাঁচটার মধ্যেই নগরের আবর্জনা পরিষ্কারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সিটি করপোরেশন।
আজ বেলা সাড়ে তিনটায় নগরের আন্দরকিল্লায় নিজ বাসভবনে হুইল চেয়ারে বসে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, বেলা তিনটার মধ্যেই শহরের প্রায় সব জায়গা থেকে বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে। করপোরেশনের এ কাজে সহযোগিতা করায় নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানান মেয়র।
গতকাল শুক্রবার সকালে নিজ বাসায় পা পিছলে পড়ে কোমরে আঘাত পেয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
আজ বেলা দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত নগরের ২ নম্বর গেট, প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ, চকবাজার, চন্দনপুরা, কলেজ রোড, গণি বেকারি, চেরাগী পাহাড় মোড়, মেহেদীবাগ, কাজীর দেউড়িসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ এলাকার বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এসব এলাকার মূল সড়ক পরিষ্কার। তবে কয়েকটি অলি-গলি থেকে তখনো বর্জ্য অপসারণ করছিলেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
এসব এলাকায় মূল সড়ক, গলিতে ও ভবনের সামনের খালি জায়গায় শনিবার সকালে ঈদের নামাজ শেষে পশু জবাই করতে দেখা যায়।
নগরের চকবাজার এলাকার বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনের লোকজন দুপুরের পর থেকেই বর্জ্য অপসারণ শুরু করেন। তাঁরা মূল সড়কের পাশাপাশি অলিগলি থেকেও দ্রুত সময়ের মধ্যে আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন।
নগরের পাহাড়তলীর বাহাদুর নগর এলাকার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম বিকেল পাঁচটার দিকে জানান, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা দুপুর ১২টার দিকে এক দফা আবর্জনা নিয়ে গেছেন। এরপর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আরেক দফা বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন। এখন এলাকা পরিষ্কার রয়েছে।
নগরীর হালিশহর কে ব্লক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাসান বলেন, বেলা দুইটার দিকে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা আগে থেকেই যাঁর যাঁর বর্জ্য গলির মুখে রেখে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা আবর্জনা নিয়ে গেছেন।
মেয়রের সংবাদ সম্মেলন
নগরের কোরবানির পশু বর্জ্য অপসারণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বিকেল পাঁচটার মধ্যে পুরো নগরের পশুর বর্জ্য অপসারণ করব। ইনশা আল্লাহ তারও অনেক আগে তিনটার মধ্যে চট্টগ্রাম শহরে আমরা প্রায় সব জায়গায় বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
নগরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় গতকাল শুক্রবার বাসায় পড়ে গিয়ে পায়ে একটা ফ্র্যাকচার হয়েছে। যে কারণে একান্ত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাসা থেকে বের হতে পারছি না। তাই পুরো শহরটা প্রদক্ষিণ করার কথা থাকলেও পারিনি। আমি না পারলেও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে একাধিকবার সভা করেছি গতকাল বাসায়। সকাল থেকে যোগাযোগ করেছি।’
নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ে নগরবাসীর অনাগ্রহের বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘পশু কোরবানিদাতারা যাতে নিজস্ব আঙিনায় অথবা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দেন, এ জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। সেখানে বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য ত্রিপল, কোরবানিদাতাদের বসার ব্যবস্থা এবং হালাল উপায়ে কোরবানি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তবে জবরদস্তি তো আমরা করতে পারি না।’
‘এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, অন্য বছর যাঁরা রাস্তার ধারে কোরবানি করেছেন এবার তাঁরা চেষ্টা করেছেন নিজস্ব জায়গায় কোরবানি করতে। হয়তো অনেকে নির্ধারিত স্থানে যেতে পারেননি, তবে খুব দ্রুত বর্জ্য অপসারণে আমাদের সহায়তা করেছেন। আশা কারি আগামী বছর এটাকে শতভাগ সফলতায় উন্নীত করব।’
সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হাসনী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ।