পদ্মায় লঞ্চডুবি: বৈরী আবহাওয়া, উদ্ধারকাজ শুরু হয়নি
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: দুর্ঘটনার পর আট ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে ডুবে যাওয়া লঞ্চ তিনটি উদ্ধারের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। মুষলধারে বৃষ্টি ও তীব্র স্রোতের কারণে নদীতে নামতে পারেননি ডুবুরিরা। এ ঘটনায় নিখোঁজ ১৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ওয়াপদা লঞ্চঘাটে স্রোতের তোড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। লঞ্চ তিনটি হলো, মৌচাক-২, মহানগরী, নড়িয়া-২। মৌচাক-২ লঞ্চটি ওয়াপদা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকায় চলাচল করে। মহানগরী ও নড়িয়া-২ এই লঞ্চঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জে চলাচল করে।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আলাদাভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিআইডব্লিউটিএর তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য ঘটনাস্থলে প্রস্তুত আছে বিআইডব্লিউটিএর তিন সদস্যের ডুবুরি দল, ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর ও শরীয়তপুরের দুটি দল।
ওয়াপদা লঞ্চঘাটের ইজারাদার মোতাহার শিকারি জানিয়েছেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে ভাঙন ও স্রোতের টানে ঘাট থেকে পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন পন্টুনে পাঁচটি লঞ্চ নোঙর করা ছিল। তার মধ্যে তিনটি লঞ্চ স্রোতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন, নড়িয়ার গোয়ালবাথান গ্রামের আকবর সরদারের ছেলে রবীন সরদার (২৫), বিঝারী ইউনিয়নের হারুন তালুকদারের ছেলে ও নড়িয়া-২ লঞ্চের মাস্টার সজল তালুকদার (৩৮), নড়িয়া-২ লঞ্চের খালাসি জয়, মিস্ত্রি সাদেক, ফরিদপুরের মুসা মিস্ত্রির ছেলে ও মহানগরী লঞ্চের চালক শাহ আলম (৩৫), মহানগরী লঞ্চের গিজারম্যান চাঁদপুরের সালাহউদ্দীন (৩০), সুরেশ্বর গ্রামের আব্দুর রশিদ শেখের ছেলে ও মৌচাক-২ লঞ্চের দোকানদার লিটন শেখ (২৫), হালইসার গ্রামের খালেক মাদবরের ছেলে ও মৌচাক-২ লঞ্চের বাবুর্চি মানিক মাদবর (৩৪), মৌচাক-২ লঞ্চের কেবিন বয় বরিশালের বশির (২৯), মৌচাক-২ লঞ্চের সুকানি ভোলার রফিক (৫৫), মৌচাক-২ লঞ্চের মাস্টার চাঁদপুরের জাকির (৪৪), মৌচাক-২ লঞ্চের লস্কর পলাশ (২০), মৌচাক-২ লঞ্চের যাত্রী নড়িয়ার লোনসিং গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী পারভীন আক্তার (৩৭), শাশুড়ি ফখরুন্নেছা (৫৫) এবং মোহাম্মদ আলীর পাঁচ দিনের শিশুকন্যা।
আজ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবা আক্তার ও জেলা সিভিল সার্জন নির্মল চন্দ্র দাস। দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর মো. মোজাম্মেল হক।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মাহবুবা আক্তার বলেন, ‘নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। আমরা পূর্ণাঙ্গ তালিকা করার চেষ্টা করছি।’
পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলেই উদ্ধার তৎপরতা শুরু হবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে।