উড়োজাহাজে অচেতন হয়ে পড়লেন যাত্রীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ফ্লাইটটি পরিচালনার আগেই ধরা পড়েছিল এর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা কাজ করছে না। আর এ কারণে উড্ডয়নে তিন ঘণ্টা বিলম্ব করে ফ্লাইটটি। উড়োজাহাজে ওঠার আগেই বিষয়টি জানতে পারেন যাত্রীরা। তবে যাত্রাপথে কোনো সমস্যা হবে না—এমন আশ্বাস দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই উড্ডয়ন করে উড়োজাহাজটি। আর এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশির ভাগ যাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের একটি হজ ফ্লাইটে।
সৌদি আরবের মদিনা থেকে পাকিস্তানের করাচি যাচ্ছিল এসভি-৭০৬ হজ ফ্লাইটটি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ত্রুটির কারণে উড্ডয়নে বিলম্ব হয় তিন ঘণ্টা। উড়োজাহাজে উঠে কিছুক্ষণের মধ্যে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন যাত্রীরা। অনেকে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় অচেতন হয়ে পড়েন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উড়োজাহাজের ভেতরে তখনকার অবস্থার ভিডিও প্রকাশ করা হলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, যাত্রীরা কাগজের লিফলেট পাখা বানিয়ে বাতাস করছেন। কেউ কেউ বের হয়ে যাওয়ার দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
যাত্রীরা বলেন, ফ্লাইটটিতে বেশির ভাগ নারী ও শিশু যাত্রী ছিল। যাত্রীরা উড়োজাহাজে ঢোকার পর জানতে পারেন, প্লেনটির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রটি কাজ করছে না। অনেকে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তাঁদের বলা হয়, অবতরণের আগে বিষয়টি ঠিক করে ফেলা হবে। তবে পুরো যাত্রাপথে এটি ঠিক করা হয়নি বলে যাত্রীরা জানান।
করাচি বিমানবন্দরের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সারা ইকবাল ও তাঁর স্বামী ছিলেন ফ্লাইটটিতে। তাঁদের বক্তব্যে ভেতরকার পরিস্থিতি কী হয়েছিল, তা কিছুটা জানা যায়। পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সারা বলেন, ‘সৌদি সময় অনুযায়ী দেড়টার প্লেন ছাড়ার কথা থাকলেও ফ্লাইটটি ছাড়তে দুই ঘণ্টা দেরি করবে বলে জানানো হয়। যখন অপেক্ষা করছিলাম, জানতে পারি বিমানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা কাজ করছে না। আর উড্ডয়নের জন্য তাপমাত্রা কমানো প্রয়োজন ছিল। এর কিছুক্ষণ পর হজফেরত ৩০০ যাত্রীকে প্লেনে ওঠানো হয়। ঢুকতেই আমরা দেখি, উড়োজাহাজের কর্মীরা ঘামছেন। এরপর সাড়ে চারটার সময় উড়োজাহাজটি ছাড়ে। আমরা ভেতরে গরমে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম। উড্ডয়নের ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্লেনের ভেতরে থাকা বয়স্ক ব্যক্তিরা অচেতন হয়ে পড়েন। তাপমাত্রা বেশি এবং সীমিত জায়গার কারণে অন্যদের মাথাও চক্কর দিচ্ছিল।’
সারা আরও বলেন, ‘যাঁরা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের সাহায্য করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে পরে আমরা জানতে পারি যে ককপিটের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটি ঠিকমতোই কাজ করছে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, নামার সময় এই অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়—কাগজে এমন সই নেওয়া হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। যাঁরা ওই কাগজে সই করতে চাননি, তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থার কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।