রোহিঙ্গাদের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রয়োজন

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু পরিকল্পনার প্রয়োজন। রোহিঙ্গারা যেন নিরাপত্তা হুমকিতে না পড়ে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘আমরাও রোহিঙ্গা’ শীর্ষক এক সংহতি সভায় এসব কথা বলা হয়।

রোহিঙ্গা শরণার্থী রক্ষণাবেক্ষণে নাগরিক সমাজের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় আইন বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘যেখানে সহিংসতা হচ্ছে, সেখানে আন্তর্জাতিক আইন, যুদ্ধ আইন, কার কী ভূমিকা, সেগুলো কতটা গ্রহণযোগ্য বা অগ্রহণযোগ্য—সেসব নাগরিক সমাজের চর্চার বিষয় হতে পারে।’ এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে এ সমস্যার পার্থক্য হচ্ছে, বন্যার্ত মানুষেরা আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারে। কিন্তু রোহিঙ্গারা তা সহজে পারবে না। এখানে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।

সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রাণ, সেবা ও প্রত্যাবর্তন নিয়ে রামরু একটি প্রস্তাব দেয়। রামরুর চেয়ারপারসন তাসনিম সিদ্দিকী এটি তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়, ত্রাণ ও পুনর্বাসনে নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে দ্রুত একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা দরকার। নাগরিক সমাজের জ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করে সমন্বয় কমিটি করতে হবে। আরও লোকবল নিয়োগ দেওয়াসহ শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সেলিং করাতে হবে। নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। রামরুর আবেদন, রোহিঙ্গাদের যেন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা না হয়। তাঁরা হুমকি নয়, নিজেরাই নিরাপত্তাহীন।

প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথাও বলা হয়। এ ছাড়া জাতিসংঘ শরণার্থী-সংক্রান্ত হাইকমিশনের নির্বাহী পরিষদ ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার, আন্তর্জাতিক প্রচারণার পাশাপাশি শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং এ ব্যাপারে ভারত ও চীনের বর্তমান অবস্থান পরিবর্তনের জন্য তাদের সঙ্গে আলোচনার কথা বলা হয়।

জাতিসংঘ শরণার্থী-সংক্রান্ত হাইকমিশনের সাবেক কর্মকর্তা মো. মহিউস সুন্নাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা শুধু এ দেশের না, এটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। আমরা চাই, সারা বিশ্ব তাদের সভ্যতার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসুক।’ এ ছাড়া নিরাপত্তা ইস্যুতে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে নিরাপত্তা ইস্যু আছে কি না, বা এটা বিভ্রান্ত করার জন্য কারও সৃষ্ট কিছু কি না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

রামরুর জ্যেষ্ঠ গবেষক জালালউদ্দিন শিকদার বলেন, ভূমি মাইন ব্যবহারের বিপক্ষে যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করে, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মিয়ানমারের মাইন ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, ‘বাংলাদেশ অত্যন্ত গৌরবের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করছে। আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকেও এগিয়ে আসতে হবে। এই নিগৃহীত জাতিগোষ্ঠী যাতে মর্যাদার সঙ্গে ফিরে যেতে পারে, সে ব্যবস্থাও করতে হবে।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ