রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে ওদের লড়াই

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নাফ নদীর তীরে কক্সবাজারের দয়ালপাড়া গ্রাম। সেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে একটানা রোগী দেখে যাচ্ছেন চিকিৎসক মোহাম্মদ হোসেন। গত দুই ঘণ্টায় ৫০ জনেরও বেশি রোগী দেখেছেন তিনি। কাছের আরেকটি মসজিদে অপেক্ষা করছে আরও ৪০ জন।

আল-জাজিরার খবরে জানা যায়, শরণার্থীশিবিরে ৩২ জনের একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসক হোসেন। মিয়ানমারে চলা সহিংসতা থেকে বাঁচতে সীমান্ত পার হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছেন তিনি।

ঢাকার বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে আমি এখানে এসেছি। তাদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন।’

অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক হোসেন। তাঁর রোগী ২৫ বছরের রোহিঙ্গা নারী সোমেরন। রাখাইন থেকে পালিয়ে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছেন তিনি। সঙ্গে ১২ বছরের মেয়ে সাবিহা।

সোমেরন বলেন, ‘আমার সারা শরীরে র‍্যাশ বেরিয়েছে। আজ সকালেই আমি ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা পেয়েছি। চিকিৎসার পর আমার র‍্যাশ হয়তো সেরে যাবে। কিন্তু আমি আমার মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত।’

৪ লাখ ৯ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা গত ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে এসে ঢুকেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই কক্সবাজার থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত গ্রাম দয়ালপাড়ায় রয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মুখপাত্র ক্রিস লম আল-জাজিরাকে বলেন, এটি সত্যিই খুব খারাপ পরিস্থিতি। এখানকার রোহিঙ্গারা খুবই বিপজ্জনক পরিবেশে রয়েছে। তাদের কাছে যথেষ্ট খাবার, পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা নেই। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা খুবই বিপজ্জনক পরিবেশে রয়েছে। বিশেষ করে শিশুরা খুবই বিপন্ন। যদি তারা দূষিত পানি পান করে, তাহলে তাদের ডায়রিয়া হতে পারে। এমনকি অপুষ্টির কারণে তারা মারাও যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির প্রধান ইফতিয়ার আসলানভ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘লোকেরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে। আমরা তাদের স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও খাবার দিয়ে সহায়তা করছি।’

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের চিকিৎসক মহসিন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ২০০ রোগী দেখি। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী। রোগী এত বেশি আসছে যে আমাদের আরও ওষুধ প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা রোগীদের মধ্যে ডায়রিয়া, ত্বকে সংক্রমণ, উদ্বেগ, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ