জঙ্গিদের অর্থায়নে জড়িত ওয়াইমি টেকনোলজি
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ওয়াইমি টেকনোলজি নামে একটি সফটওয়্যার কোম্পানি বাংলাদেশে জঙ্গিদের অর্থায়নে জড়িত। বিদেশ থেকে অর্থের ৫৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটি জঙ্গি অর্থায়নে ব্যয় করত। বাকি ৪৭ শতাংশ অর্থে ওয়াইমির অবকাঠামো ও বেতনে ব্যয় করা হতো বলে দাবি করেছে র্যাব। জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আল মামুন (২০), আল-আমিন (২৩), ফয়সাল ওরফে তুহিন (৩৭), মঈন খান (৩৩), আমজাদ হোসেন (৩৪), মো. জাহেদুল্লাহ (২৯), আল আমিন (২৩) ও মো. হেলাল উদ্দিনকে (২৭) পল্লবীতে ওয়াইমির কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময়ে তাঁদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাজুল ইসলাম (২৭) ও টনি নাথকে (৪০) খুলনা থেকে এবং মো. নাহিদকে (৩০) রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এই ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সাতজন ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার কোম্পানি আইব্যাক লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশসহ বিশ্বের নয়টি দেশে এর শাখা খোলা হয়েছিল। আইব্যাক জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বাশারুজ্জামান চকলেটের মাধ্যমে তামিম চৌধুরীকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা দিতে চেয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ছিলেন সিফুল হক সুজন। তিনি ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর সিরিয়ায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্যেও এর প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে ২০১৫ সালে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলাও হয়েছিল। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে সিফুলের বাবা হাসনাত কারাগারে মারা যান। বাকি চারজন পরে জামিনে ছাড়া পান। এঁদের মধ্যে নাহিদ ও তাজুল গতকাল রাতের অভিযানে গ্রেফতার হন। পরে সিফুলের ভাই আতাউল হক ওরফে সবুজ স্পেনে গিয়ে আইব্যাকের আদলে সিনটেল নামে একই প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এর আদলে বাংলাদেশে সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াইমি টেকনোলজি চালু করে।
স্পেনে আজ সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, আজকের অভিযানে অন্য একটি নতুন মাত্রা আছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যখন নিশ্চিত হওয়া যায় যে বাংলাদেশি এক নাগরিক স্পেনে থেকে জঙ্গি কাজে জড়িত আছে। তারপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে স্পেনের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং সবুজকে সেখানেই চিহ্নিত করা হয়। পরে বাংলাদেশে যখন অভিযান হচ্ছিল, একই সময় স্পেনে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আতাউল হক সবুজকে গ্রেপ্তার করেছে। সবুজের স্ত্রীও স্পেনে থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধেও সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, কী প্রক্রিয়ায় জঙ্গি অর্থায়ন এসেছে, এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবাই এ বিষয়ে জানতেন। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আরও জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।