শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলেন ছাত্র
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ইন্টার্নশিপ রিপোর্টে স্বাক্ষর করা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে কিলঘুষি মেরে আহত করেছেন তাঁরই এক ছাত্র। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
মারধরের শিকার অধ্যাপকের নাম হাছানাত আলী। তিনি আইবিএতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। মারধরের পর তাঁর বাঁ চোখের পাশে ও নিচে জখম হয়। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মারধর করা আবু নাহিদ মো. হায়দার একই ইনস্টিটিউটের এমবিএ (দিবা) নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
শিক্ষক হাছানাত আলীর অভিযোগ, ‘নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৪ সেপ্টেম্বর। অনেক শিক্ষার্থীই নির্দিষ্ট সময় রিপোর্ট জমা দিতে না পারায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। নাহিদ তাঁর ইন্টার্নশিপের কাজ সঠিকভাবে না করেই অনৈতিকভাবে আমার স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি পর্যবেক্ষণের জন্য নাহিদকে ওই রিপোর্ট ২৪ সেপ্টেম্বর (রোববার) নিয়ে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু নাহিদ সেটা না করে আজ (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা একটার দিকে আমাকে ফোন দেয়। আমি ইনস্টিটিউটের বাইরে থাকায় তাকে সাড়ে তিনটার দিকে অফিসে আসতে বলি। আড়াইটার দিকে আমি ইনস্টিটিউটে ফিরে একটি ক্লাস নেওয়ার জন্য ক্লাসরুমের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় নাহিদ আমার পথরোধ করে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও গালিগালাজ করে।’
নাহিদের স্ত্রী নাহিদা হায়দার বলেন, ‘ওই স্যারের অধীনে ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট করায় আমার স্বামী তাঁর কাছে স্বাক্ষর নিতে বারবার যেত। কিন্তু ওই স্যার আমার স্বামীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। আজ আমার স্বামীর মা-বাবা তুলে গালিগালাজ করায় হয়তো স্যারকে মারধর করেছে। তা ছাড়া এমনটা করার কথা নয়।’
আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার পর বিকেল পাঁচটায় ইনস্টিটিউটে জরুরি সভা হয়েছে। এতে ওই ছাত্রের ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট জমাদানের প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মহসিন-উল-ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমি নিজে ইনস্টিটিউটে গিয়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর পুলিশকে অবহিত করি। পরে পুলিশ এসে ওই ছাত্রকে আটক করে মতিহার থানায় নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, ওই ছাত্রকে থানায় আটক রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।