মামলার জালে সেনা কর্মকর্তার গাড়িচালকসহ ৮ জন
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: উল্টো পথে গাড়ি চালানোর দায়ে এক সেনা কর্মকর্তার গাড়িচালকসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া মামলা করার মতো প্রয়োজনীয় কাগজ চালকের কাছে না থাকায় এক যুগ্ম সচিবের গাড়ি থামানোর পর সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধার সামনে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। গত দুই দিনে সচিব এবং পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উল্টো পথে গাড়ি চালিয়ে জরিমানা গুনেছেন।
পুলিশের ট্রাফিক (দক্ষিণ) বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. আলাউদ্দিন বলেন, বিকেল থেকে মোট আটটি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়িতে থাকা সেনাবাহিনীর মেজর মো. সোহেলের গাড়িচালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ সময় মেজর সোহেল গাড়িতে ছিলেন। এ ছাড়া একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং ছয়জন মোটরসাইকেলচালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের গাড়িচালককে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে আজ দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। এ সময় তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নিজেদের গাড়ি যেন উল্টো পথে না চলে, সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উল্টো পথে চালানো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সমবায়সচিবের চালককে অব্যাহতি : পরপর দুই দিন উল্টো পথে গাড়ি চালিয়ে ধরা পড়া পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়সচিবের গাড়িচালক বাবুল মোল্লাকে চালকের পদ থেকে আজ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন এ কথা নিশ্চিত করেন।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মাফরুহা সুলতানার গাড়িচালক বাবুল মোল্লা উল্টো পথে গাড়ি চালিয়ে প্রথম দিন রোববার হেয়ার রোডে ট্রাফিক পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। ঠিক এক দিন পর গতকাল সোমবার বিকেল চারটার দিকে তিনি আবারও উল্টো পথে গাড়ি চালিয়ে বাংলামোটরে ধরা পড়েন। দুবার ধরা পড়ার সময় ওই গাড়িতে সচিব মাফরুহা সুলতানা ছিলেন।
গত দুই দিনে উল্টো পথে চালিয়ে শাস্তি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতিমন্ত্রী, সাংসদ, সচিব, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ, পুলিশ, সাংবাদিক, বিচারক ও ব্যবসায়ীদের গাড়ি ছিল। গত রোববার বিকেল চারটার দিকে সুগন্ধার সামনে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ উপস্থিত হন। তাঁর উপস্থিতিতেই পুলিশ এ অভিযান শুরু করে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
গত রোববার দুই ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের অভিযানে উল্টো পথে চালানো মোট ৫৭টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা ও সাতটি গাড়ির কাছ থেকে রেকার বিল আদায় করে পুলিশ। এর মধ্যে ৪০টির বেশি গাড়ি ছিল সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।