আত্মসমর্পণ করলেন তুফানের পলাতক ভাই মতিন
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: একটি খুনের মামলায় আদালতের নথিপত্রে আট বছর ধরে ‘পলাতক’ বগুড়ার যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকার অবশেষে আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ বুধবার বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১–এ হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক ইমদাদুল হক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আবদুল মতিন সরকার বহুল আলোচিত বগুড়ার ছাত্রী ধর্ষণ এবং মা-মেয়েকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার মামলার প্রধান আসামি শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের মেজ ভাই।
একটি খুনের মামলায় নথিতে আট বছর ধরে ‘পলাতক’ থাকা এই আবদুল মতিনের বিরুদ্ধে গত ২০ জুন আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও এত দিন পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তিনি।
‘পলাতক’ আবদুল মতিন সরকারের এত দিন ধরে শহর দাপিয়ে বেড়ানো এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ওঠবসের বিষয়টি নিয়ে গত ২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপরই গা ঢাকা দেন আবদুল মতিন সরকার। তিনি বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ছাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার মূল আসামি তুফান সরকার এত দিন বড় ভাই মতিন সরকারের প্রশ্রয়ে বগুড়া শহর দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ছোট ভাই তুফানের অপকর্মের কারণে র্যাবের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী আবদুল মতিনের অবৈধ কর্মকাণ্ডও ফাঁস হয়ে পড়ে। এ জন্য ১ আগস্ট যুবলীগ থেকে মতিন সরকারকে বহিষ্কার করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, বগুড়ার আবু নাছের ওরফে মুন্সি উজ্জ্বল হত্যা মামলার নথিতে আবদুল মতিন আট বছর ধরে ‘পলাতক’। ২০০১ সালের ২৮ অক্টোবর শহরের চক সূত্রাপুরের কসাইপাড়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, মতিন সরকার ও নিহত উজ্জ্বল দুজনই অবৈধ কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এসব নিয়ে বিরোধের কারণেই উজ্জ্বলকে খুন করা হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কোনো আসামি পলাতক থাকলে তাঁর জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার বিধান আছে। উজ্জ্বল খুনের মামলায় মতিন সরকারের জন্য তাজ উদ্দিন নামের একজন আইনজীবীকে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে মতিন সরকার প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও মামলায় এত দিন তিনি ‘পলাতক’ ছিলেন।
বগুড়া জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মো. আবদুল মতিন বলেন, উজ্জ্বল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যান মতিন সরকার। এরপর আর কোনো দিন আদালতে হাজির হননি। এ কারণে ২০ জুন আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজ আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।