তামিম ও মুমিনুল আশা দিচ্ছে বাংলাদেশকে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: তামিম ইকবাল যখন ব্যাটিং করতে নেমেছেন, ততক্ষণে দলের স্কোর হয়ে গেছে ৩ উইকেটে ১০৩। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতে নেমেছেন তামিম। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে নামার অভিজ্ঞতাও তাঁর প্রথম। সেটি সামাল দেওয়ার কাজটা খারাপও করেননি। তামিমের অপরাজিত ২২ আর আজ ২৭-এ পা দেওয়া মুমিনুল হকের ২৮ রান আশা দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
দিনের শেষ বলটাই উড়িয়ে মেরেছেন তামিম। না মারলেও হতো। তবে ছক্কা দিয়ে হয়তো একটা বার্তা পাঠিয়ে রাখতে চাইলেন। এর আগে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল ব্যাটসম্যানদের অক্কায়। ১৬ রানে প্রথম উইকেট, ৩৬ রানে দ্বিতীয়, মুশফিকের সহজ ক্যাচটা এলগার স্লিপে নিতে পারলে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যেত ৩ উইকেটে ৫১! শেষ পর্যন্ত দিনটা ৩ উইকেটে ১২৭ রান তুলে শেষ করলেও ফলো অন এড়াতে বাংলাদেশকে এখনো করতে হবে ১৭০ রান। প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে তারা ৩৬৯ রানে।
মেঘলা আকাশ আর প্রতিপক্ষের দীর্ঘ সময় ফিল্ডিংয়ের ক্লান্তিকে কাজে লাগাতে হয়তো চা-বিরতির পরই হুট করে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রানের ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটি তারা কাজে লাগিয়েছে ভালোই। বুক উচ্চতায় শর্ট বলে ইমরুল কায়েসকে কাবু করে ১৬ রানেই বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন কাগিসো রাবাদা। ২০ রানের মধ্যে ফিরে গেছেন লিটন দাসও। দারুণ ইনিংস খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ব্যর্থ বাংলাদেশ দলের এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান, করেছেন ২৫ রান।
৩৬ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়েছে তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিম-মুমিনুলের ৬৭ রানের জুটি। দুবার কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মুশফিক। ১৬তম ওভারে কেশব মহারাজের বলটা ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে ডিন এলগারের হাতে চলে গিয়েছিলে। কিন্তু ক্যাচটা লুফে নিতে পারেননি প্রোটিয়া ফিল্ডার। মহারাজের পরের ওভারেই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি। এবার এলগারের ব্যর্থতা। ৬ ও ১৫ রানে বেঁচে যাওয়া মুশফিক শেষ পর্যন্ত আউট মহারাজের বলেই। ৪৪ রান করে ফেলেছিলেন। দুবার জীবন পাওয়ার বিনিময়ে একটি সেঞ্চুরি পাওনাই ছিল তাঁর। টার্ন ভেবে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে করতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক; কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী টার্ন না করে বলটা তাঁর ব্যাট-প্যাড হয়ে জমেছে শর্ট লেগে মার্করামের হাতে।
মুশফিক আউটের পর দিনটা নিরাপদে পার করে দিয়েছেন তামিম-মুমিনুল। দুজনের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটি যোগ করেছে ২৪ রান। ওপেন করতে নামেননি, তাতে কী! কাল তৃতীয় দিনের শুরুতে তামিম ওপেনিংয়ের স্বাদ পাবেন! দ্বিতীয় দিনের শেষ বলে ডাউন দ্য উইকেটে ছক্কা মেরে বার্তাটাও দিয়ে রেখেছেন।
কাল দিনের শুরুটা ছক্কায় শুরু হোক আর না হোক, অহেতুক অক্কায় যেন পেয়ে না বসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের!
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস | রান | বল | ৪ | ৬ |
লিটন ক আমলা ব মরকেল | ২৫ | ২৯ | ৪ | ০ |
ইমরুল ক মার্করাম ব রাবাদা | ৭ | ২০ | ০ | ০ |
মুমিনুল ব্যাটিং | ২৮ | ৬৪ | ৪ | ০ |
মুশফিক ক মার্করাম ব মহারাজ | ৪৪ | ৫৭ | ৭ | ১ |
তামিম ব্যাটিং | ২২ | ৩৪ | ৩ | ১ |
অতিরিক্ত | ১ | |||
মোট: ৩৪ ওভারে ৩ উইকেটে | ১২৭ | |||
উইকেট পতন: ১৬/১ (ইমরুল ৫.৪ ওভার), ৩৬/২ (লিটন ১০.২ ওভার), ১০৩/৩ (মুশফিক ২৫.১ ওভার)। | ||||
বোলিং: মরকেল ৭-১-৩৪-১, রাবাদা ৯-২-২৩-১, মহারাজ ১১-৩-৩৮-১, অলিভিয়ের ৫-১-২৭-০, ফিকওয়াও ২-১-৪-০। |
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস | রান | বল | ৪ | ৬ |
এলগার ক মুমিনুল ব মোস্তাফিজ | ১৯৯ | ৩৮৮ | ১৫ | ৩ |
মার্করাম রান আউট | ৯৭ | ১৫২ | ১৩ | ০ |
আমলা ক মিরাজ ব শফিউল | ১৩৭ | ২০০ | ১৭ | ১ |
বাভুমা অপরাজিত | ৩১ | ৮৭ | ২ | ১ |
ডু প্লেসি অপরাজিত | ২৬ | ৪৯ | ৪ | ০ |
অতিরিক্ত | ৬ | |||
মোট: ১৪৬ ওভারে ৩ উইকেটে | ৪৯৬ | |||
উইকেট পতন: ১-১৯৬, ২-৪১১, ৩-৪৪৫। | ||||
বোলিং: মোস্তাফিজ ২৭-২-৯৮-১, শফিউল ২৫-৫-৭৪-১, মিরাজ ৫৬-৪-১৭৮-০, তাসকিন ২৬-৫-৮৮-০, মাহমুদউল্লাহ ৫-০-২৪-০, মুমিনুল ২-০-১৫-০, সাব্বির ৫-১-১৫-০। |