পুলিশের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে বিশ্বজিৎ চন্দ্র দে (২০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে ক্ষুব্ধ জনতা সাড়ে ৫ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রেখে। এ সময় শহরের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।
বিশ্বজিৎ পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। তিনি পৌরশহরের উত্তর বাজার কাচারীপাড়া এলাকার মৃত বিধান চন্দ্র দে’র ছেলে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ বিশ্বজিৎ পুলিশের নির্যাতনেই মারা গেছে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পুলিশের সহকারী উপপরির্দশক(এএসআই) আতিউর রহমান ও সুমন মিয়া শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজার এলাকা থেকে ৬০ গ্রাম গাজাসহ বিশ্বজিৎকে আটক করেন। পরে মুসলেকা দিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন রাত সাড়ে ১০টার দিকে থানা থেকে বিশ্বজিৎকে নিয়ে আসে। রাত ১টার সময় অসুস্থ্য অবস্থায় বিশ্বজিৎকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় বিশ্বজিতের পরিবার ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে লাশ নিয়ে আজ সকাল ৭টার দিকে উত্তর বাজার এলাকায় একত্রিত হয়। তারা সেখানে সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সামনের সাইবোর্ড ও দেয়ালে থাকা কাচ ভাঙচুর করে। পরে আগুণ জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় শহরের উত্তর বাজার এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সকাল পৌনে ১০টার সময় প্রশাসনের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু ক্ষুব্ধ জনতা লাশ নিয়ে শহরে মিছিল বের করে। দুপুর ১২টার সময় লাশের সুরতহাল করা হয়।
বিশ্বজিতের মা জবারাণী বলেন, ‘আমার ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়া পুলিশ ধইরা নিয়া গিয়া শারীরক নির্যাতন করেছে। যখন বাড়িতে নিয়া আসে তখন বারবার বমি করতে ছিলো। পরে হাসপাতালে নিয়া গেলে চিকিৎসক আমার ছেলের মৃত ঘোষণা করে। আমার ছেলের পুলিশ নির্যাতন করে মাইরা ফালাইছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও চিকিৎসক মেহেদি হাসান বলেন, রাত ১টার দিকে বিশ্বজিৎকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত না করা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
ওসি ফসিহুর রহমান বলেন, পুলিশি হেফাজতে থাকার সময়ে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। সুস্থ্যভাবে তার পরিবার বিশ্বজিৎকে থানা থেকে নিয়ে গেছেন।
সহকারী পুলিশ সুপার মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে বিশ্বজিতের বড় বোন শিউলি দে বলেন, আমার ভাইকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো। আমার ভাই কোনো নেশা করতো না। থানায় পুলিশের নির্যাতনে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।