কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা এখন সময়ের ব্যাপার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: আর কয়েক দিনের মধ্যে স্বাধীন হবে স্পেনের কাতালোনিয়া। স্পেন থেকে কাতালোনিয়ার আলাদা হয়ে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দেশটির বেশ কিছু অঞ্চলের নেতাদের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত রোববারে গণভোটের পর গতকাল মঙ্গলবার প্রথম সাক্ষাৎকারে স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির নেতা কার্লস পোয়েগডেমন বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষে অথবা আগামী সপ্তাহের শুরুতেই নতুন সরকার গঠন করা হতে পারে।
স্পেনের বর্তমান সরকার যদি এখন আঞ্চলিক সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বা কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার উদ্যোগে বাধা দেয়, তাহলে কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে কাতালান নেতা বলেন, পরিস্থিতি বদলে গেছে। এমন ভুল সব বদলে দেবে। তিনি বলেন, এখন মাদ্রিদ সরকারের সঙ্গে কাতালোনিয়ার আঞ্চলিক সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ সময় ইউরোপীয় কমিশনের দেওয়া বক্তব্যে অসম্মতি প্রকাশ করেন পোয়েগডেমন। গত সোমবার ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, কাতালোনিয়া স্পেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
পোয়েগডেমনের বক্তব্যের কিছু সময় পরই টেলিভিশনে বিবৃতি দেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ। পৃথক ওই বক্তব্যে গণভোটের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, গণভোটের আয়োজনকারীরা নিজেদের অপরাধীর পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তিনি ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতি অতি গুরুতর।’
ষষ্ঠ ফিলিপ বলেন, কাতালোনিয়ার নেতা যিনি এই গণভোটের আয়োজন করেছেন, তিনি রাজ্যের ক্ষমতাকে অসম্মান করেছেন। তাঁরা আইনের শাসনের গণতান্ত্রিক নীতিগুলি ভেঙেছেন। তবে এই পরিস্থিতি স্পেন মোকাবিলা করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রোববার গণভোটের সময় ভোটে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সমর্থনকারীরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় ৯০০ জন। এ ছাড়া ভোট গ্রহণের সময় ৩৩ জন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন বলে জানিয়েছে স্থানীয় মেডিকেল কর্মকর্তারা।
স্পেনের বিত্তশালী অঞ্চল কাতালোনিয়া। জনসংখ্যা ৭৫ লাখ। এর রাজধানী বার্সেলোনা। অঞ্চলটির নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। পাঁচ বছর ধরেই স্বাধীনতার কথা উঠছে। তবে ২০১৫ সালে কাতালোনিয়ার প্রাদেশিক পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান সেখানকার স্বাধীনতাকামীরা। নির্বাচনের ওই ফলের মধ্য দিয়ে স্পেন থেকে পৃথক হয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠনের পথে এক ধাপ এগিয়ে যায় কাতালোনিয়া। গত জুনে কাতালোনিয়া কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেয়। স্পেন সরকার এ ধরনের গণভোটকে বেআইনি বলে আখ্যা দিয়ে আসছে।