ফাঁদে পা দিলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে—বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সবকিছুর জন্য ঠান্ডা মাথায় অপেক্ষা করতে হবে। ফাঁদে পা দিলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হতো, তাহলে মিয়ানমারের সুর নরম হলো কেন? মিয়ানমারের মন্ত্রী যেখানে রোহিঙ্গা অভিযান, বিতাড়ন এবং জাতিগত নিধন একটি চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল এবং এ অবস্থানে অনড় ছিল, সেখানে মিয়ানমারের মন্ত্রী এসে ‘জয়েন্ট ওয়ার্ক’ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যদি সুর নরম না হতো, অবস্থানের পরিবর্তন না হতো, তাহলে মিয়ানমারের মন্ত্রী কী করে বাংলাদেশে এসে আলোচনা করে জয়েন্ট ওয়ার্কের কথা বলে? আমাদের সবকিছুর জন্য একটু ঠান্ডা মাথায় অপেক্ষা করতে হবে। যদি কোনো ফাঁদে আমরা পা দিই, তাহলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।’
এ সময় বিএনপির প্রতি অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিএনপির কোনো উদ্বেগ নেই। তাদের মূল উদ্বেগ রাজনীতি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘এখন আপনারা বিএনপি কী বলল এটার ওপর বারবার শুধু বলছেন; এটা বলছে, ওটা বলছে। বিএনপি রোহিঙ্গা সমস্যার ব্যাপারে কতটা আন্তরিক? আজকে বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গা সমস্যা বা বাংলাদেশ যে সংকটে পড়েছে, এখানে তারা কতটা কনসার্ন? তাদের কনসার্নটা রাজনীতির।’
দেশ গভীর সংকটে পড়েছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘দেশে তিন দফা বন্যা হলো। এ রকম একটি গভীর সংকটে আজকে দেশ নিপতিত। তাদের (বিএনপি) নেত্রী দিনের পর দিন শুধু তারিখ দিয়েই যাচ্ছেন। তিনি দেশে আসছেন না। তাঁরই তো এ ব্যাপারে কোনো উদ্বেগ, চিন্তা আছে বলে মনে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘বাকিরা এখানে বসে শুধু প্রেস ব্রিফিংয়ে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে কর্মীরা যে হতাশ, এ হতাশ কর্মীদের চাঙা করার জন্য তাঁরা আবোলতাবোল বকছেন। এ ছাড়া আমি অন্য কিছু দেখছি না।’
মিয়ানমার থেকে আবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল নামতে পারে বলে জাতিসংঘ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আসতে পারে আশঙ্কা আছে, এটা আমরা দেখি। আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগও অব্যাহত রয়েছে। কাজেই এ আশঙ্কাটা সত্য হয় কিনা সেটাও দেখতে হবে। এখন কিছু লোক আসছে।’
মিয়ানমার বারবার সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে—এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। তাদের সামরিক হেলিকপ্টার সীমান্ত লঙ্ঘন করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ব জনমতের চাপে, জাতিসংঘসহ আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে সেটা এখন আর হচ্ছে না।’
কোনো ফাঁদে পা না দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের তরফ থেকে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ওপর যে বাড়তি জনসংখ্যা চেপেছে, এই বাড়তি জনসংখ্যা আমাদের দেশ থেকে যেন তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, সেটার জন্যই আমরা চাপ প্রয়োগ করব। বিশ্বসভাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা দরকার। কারণ প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে এ আগুনের আঁচ কিন্তু অন্য প্রতিবেশীরও ঘরে গিয়েও লাগবে।’