ঢাকার রাস্তায় এই উড়ুক্কু ট্যাক্সিই তো চাই !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: অচিরেই দুবাইয়ের ঝলমলে আকাশ ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়বে। ভিড় লেগে যাবে আকাশপথে। পাখিরা হয়ে যাবে কিংকর্তব্যবিমূঢ়! কেন? কারণ, দুবাইয়ের আকাশজুড়ে আর পাঁচ বছর পরই রাজত্ব করবে উড়ন্ত ট্যাক্সি!
সম্প্রতি দুবাইয়ে বিশ্বের প্রথম উড়ন্ত ট্যাক্সির পরীক্ষামূলক ওড়ানোর আয়োজন করা হয়েছিল। চালকবিহীন এই বাহনটিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ শেখ হামদান বিন মোহাম্মাদ চেপে বসেন। তারপর পাঁচ মিনিট, মাটি থেকে ২০০ মিটার উচ্চতায় ঠিক যুবরাজের মতোই ঘুরে বেড়ান দুবাইয়ের ঝকঝকে নীল আকাশে। এরই মাধ্যমে বিশ্ব জানতে পারে, উন্নয়নের হাওয়ার পালে ছুটে চলা দ্রুতগামী শহরটি বিশ্বের প্রথম উড়ন্ত ট্যাক্সি আকাশে ওড়ানোর নজির রাখল!
জার্মানের ড্রোন তৈরির কোম্পানি ‘ভলোকপটার’ এই উড়ন্ত ট্যাক্সির নকশা করেছে। দুজন যাত্রীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাক্সিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলে সক্ষম। এ ছাড়া উড়ে বেড়ানোর জন্য আছে ১৮টি রটার ঘূর্ণক, যাদের সাহায্যে এই ট্যাক্সিটি উল্লম্বভাবে যাত্রা শুরু করতে পারবে, একই রকম মাটিতে নামবেও উল্লম্বভাবে। এটি স্বাধীনভাবে আকাশে একটানা ৩০ মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারবে। সাধারণ যাত্রীরা বর্তমানে স্মার্টফোনের সাহায্যে যেমন করে উবারের সহায়তা নিচ্ছে, উড়ন্ত ট্যাক্সির ক্ষেত্রেও ঠিক একইভাবে যোগাযোগ করে নিকটবর্তী ভলোপোর্ট থেকে চেপে বসতে পারবেন এই উড়ন্ত বাহনে। অনেক কম সময়েই পৌঁছাতে পারবেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
দুবাইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে উড়ান সম্পন্ন হলো উড়ুক্কু ট্যাক্সির। ছবি: দুবাইডটকম
স্বয়ংক্রিয় হওয়ার কারণে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই থাকছে না। কারণ, আগাম নিরাপত্তার খাতিরে এই বাহনেই মজুত করা থাকবে অতিরিক্ত ব্যাটারি, রটার, এমনকি প্যারাস্যুটও! তবে একটা বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ইংল্যান্ডের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবট বিশেষজ্ঞ প্রফেসর নোল শার্কি তেমনটিই মনে করেন। তিনি বলেন, ‘উড়ন্ত ট্যাক্সির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে গতিশীল বাধা উপেক্ষা করে অগ্রসর হওয়া। বাধা আসতে পারে পাখি, উঁচু দালান, ড্রোন কিংবা অন্যান্য উড়ন্ত ট্যাক্সি থেকেও।’ তবে নির্মাতারা আশ্বস্ত করেছেন, যত দিন পেরোবে, চালকবিহীন এই উড়ুক্কু ট্যাক্সির প্রযুক্তি হবে আরও উন্নত হবে।
দুবাই আশা করে, ২০৩০ সালের মধ্যেই তাদের এক-চতুর্থাংশ যানবাহন হবে স্বয়ংক্রিয়। আর এভাবেই দুবাই স্বপ্ন দেখে বিশ্বের এক তারকাখচিত শহর হওয়ার! বলে রাখা ভালো, এই ড্রোন প্রথম জার্মানিতে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ওড়ানো হয়। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে উড়ন্ত ট্যাক্সির পরিকল্পনার প্রকল্প হিসেবে প্রথম যাত্রীসহ ওড়ানো হয় দুবাই শহরেই।
এরও বেশ কিছু আগে চীনে উড়ন্ত ট্যাক্সি ওড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বেশ পিছিয়ে পড়ায় দুবাই এগিয়ে এসে নাম লিখিয়ে নিল বিশ্বের আরও একটি ‘যা কিছু প্রথম’-এর তালিকায়!
তবে এই উড়ুক্কু ট্যাক্সি বোধ হয় সবচেয়ে বেশি দরকার ঢাকা শহরেই।