এটাকে কি কেউ রাস্তা বলবে ?
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সড়কের কোথাও পিচের কোনো চিহ্ন নেই। সড়কজুড়ে উঁকি দিচ্ছে ইট-সুরকি। ছোট-বড় গর্তে একাকার পুরো সড়ক। কোনো অংশে জমে আছে কাদামাটি।
এই চিত্র দক্ষিণখানের মৌশাইর চৈতি গার্মেন্টস এলাকার গণকবরস্থান সড়কের।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে সড়কের এই দশা। সড়কে গর্তের কারণে এত ঝাঁকুনি হয় যে রিকশা কিংবা ব্যাটারিচালিত রিকশায় স্থির হয়ে বসে থাকা কঠিন। ঝাঁকুনিতে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা হয়ে যায়।
গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, চালাবন বাসস্ট্যান্ড থেকে ট্রান্সমিটার মোড় বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত গণকবরস্থান সড়ক যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কটি ন্যাড়া হয়ে গেছে। ভেঙেচুরে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। কোথাও জমে আছে কাদাপানি। বিভিন্ন সময় ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে ফেলা ইটের টুকরাগুলো এলোমেলো পড়ে আছে। হেলেদুলে চলছে যানবাহন। ঝাঁকুনির কারণে যাত্রীরা রিকশা কিংবা অটোরিকশায় স্থির বসে থাকতে পারছেন না। উঁচুনিচু সড়ক, গর্ত ও ছোট-বড় ইটের টুকরার কারণে সড়ক দিয়ে হেঁটে চলাচলও কষ্টকর। অসাবধানে পা ফেলে অনেকে ভারসাম্য হারাচ্ছেন, ইটের টুকরার সঙ্গে হোঁচট খাচ্ছে কেউ কেউ।
মৌশাইরের বাসিন্দা মো. আকবর হোসেন বলেন, ‘পুরোটাই ভেঙে গেছে। এটাকে কি এখন কেউ রাস্তা বলবে? বৃষ্টি হলে সড়কে কাদাপানি জমে থাকে। তখন ধানি জমি মনে হয়।’ তিনি বলেন, সড়কটি এমন বেহাল যে সুস্থ-সবল মানুষের পক্ষেও চলাচল করা কঠিন।
সড়কটি দিয়ে বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। তাদের মধ্যে রয়েছে মৌশাইর মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী তানিয়া ও তার ছোট ভাই তানভির। তানিয়া বলে, রাস্তায় ঝাঁকুনির কারণে রিকশায় ঠিক করে বসে থাকতে পারি না, অনেক কষ্ট হয়। শক্ত করে দুই হাতে রিকশা ধরে রাখতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দুই বছর ধরে গণকবরস্থান সড়কের এমন অবস্থা। বিভিন্ন সময় এলাকার লোকজন, কখনো ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ইট, সুরকি, বালু, মাটি ফেলা হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে সংস্কার বা মেরামতের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এতে সড়কটি একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মোতালেব মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখন এমন অবস্থা, আমরা না ইউনিয়ন না সিটি করপোরেশন। পরিকল্পনা থাকলেও কোনো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সিটি করপোরেশন কোনো কার্যক্রমও শুরু করছে না।’ তিনি বলেন, সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে তাঁরা স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে কথা বলবেন।