পুরোনো কারাগার সাজবে নতুন সাজে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে শিগগিরই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কারাগারটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য ‘নকশা প্রদর্শনী ও নকশা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ’ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।
গতকাল সোমবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে কারা অধিদপ্তর এই প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করে। প্রস্তাবিত নতুন নকশা অনুযায়ী ১৭ একর আয়তনের কারা এলাকাকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা হবে। এর মধ্যে অঞ্চল-এ তে মাল্টিপারপাস হল, কনভেনশন সেন্টার, সিনেপ্লেক্স, খাবার ঘর, সুইমিংপুল, গাড়ি পার্কিং, ব্যাংকসহ অন্য সুবিধা থাকবে। অঞ্চল-বি তে বইয়ের দোকান, ফুলের দোকান, ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিং। অঞ্চল-সি তে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, চার নেতার কারাস্মৃতি জাদুঘর ও উদ্যান।
নকশা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করায় স্থপতি আবদুর রশীদ ও তাঁর দলকে সাত লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারকারী স্থপতি আমিনুল এহসান ও তাঁর দলকে ৫ লাখ টাকা ও বিশেষ সম্মাননা হিসেবে স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম ও তাঁর দল, কাশিফ হাসনাইন ও তাঁর দল, আবুল ফজল মাহমুদুন নবী ও তাঁর দলকে এক লাখ টাকা পুরস্কার এবং প্রত্যেককে সনদ দেওয়া হয়।
এই প্রদর্শনী আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে। নকশার প্রথম পর্বের কাজ ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, নাজিমুদ্দিন রোডের এই কারাগারটিতে বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতার অনেক স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধসহ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময়কার নেতারাও এখানে ছিলেন। তাই ঐতিহ্য ঠিক রেখে পরিকল্পিত নকশা অনুযায়ী অতি দ্রুত স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এতে পুরোনো কারাগারটি নান্দনিক সৌন্দর্যমণ্ডিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এই কারাগারটিকে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করতে চাই। এর মাধ্যমে মানুষ এই কারাগারের স্মৃতিবিজড়িত অনেক ইতিহাস জানতে পারবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ আমলে পুরান ঢাকার এই এলাকার আলাদা সৌন্দর্য ছিল। এখন সেই আদলেই জাদুঘর করা হবে। পুরান ঢাকাবাসী তথা সারা দেশের মানুষের জন্য এখানে সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। থাকবে বিনোদনকেন্দ্র ও মুক্ত জলাশয়।
অনুষ্ঠানে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এই কারাগারের জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত স্থাপত্য নকশা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এতে ২৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। গত ৫ অক্টোবর তারা ৩৪টি নকশা জমা দিয়েছে। পরে জুরিবোর্ড তাদের মধ্য থেকে সার্বিক বিবেচনায় পুরস্কার ঘোষণা করে।’
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রসচিব (ভারপ্রাপ্ত) রাখাল চন্দ্র বর্মণ, অতিরিক্ত সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মহিবুল হক, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আবু সাঈদ এম আহমেদ, উপসচিব (কারা) শিরিন রুবী, উপকারা মহাপরিদর্শক বজলুর রশিদ (সদর দপ্তর), তৌহিদুল ইসলাম (ঢাকা), পার্থ গোপাল বণিক (চট্টগ্রাম) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।