সীতাকুণ্ডে এক গ্রামে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ১১০ !
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এক গ্রামে ১১০ জন বাসিন্দা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি মদনাহাট জেলেপাড়া এলাকায় বাসিন্দারা এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
১৫ দিন আগে থেকে একটি পরিবারের একজন নারীর এ লক্ষণ দেখা যায়। ধীরে ধীরে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসকেরা বলেন, রোগীদের লক্ষণ দেখে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এসব মানুষ। তাদের রক্তসহ নানা নমুনা পরীক্ষার পর এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে পশ্চিম দিকে আড়াই শ মিটার যাওয়ার পর মদনাহাট জেলেপাড়া। এ গ্রামটি সাগর-সংলগ্ন। এদিক দিয়ে বয়ে যাওয়া সোনাইছড়ি খালের পাশেই জেলেপাড়াটি।
আজ বেলা ১১টায় সেখানে যাওয়ার পর চোখে পড়ল তিনজনের একটি চিকিৎসক দল সেখানে রোগী দেখছে। দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দীকি সেখানে আসেন। তিনি বলেন, ‘এ গ্রামের ৯৫ শতাংশ পরিবার মশারি ব্যবহার করে না। যাদের আছে তারাও টানিয়ে ঘুমায় না। এটাই এ গ্রামে রোগটি ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ। একজন চিকুনগুনিয়া রোগীকে কামড়িয়ে মশা আরেকজনকে কামড়েছে। এভাবেই রোগটি ছড়িয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল চন্দ্র দাস বলেন, গত সপ্তাহে তাঁর গায়ে জ্বর আসে। সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরের প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় ব্যথা শুরু হয়। পরে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। জ্বর বেশি এলে ডোজ দিয়েছেন। কিন্তু জ্বর সেরে গেলেও ব্যথা কমেনি। এখন তাঁর মনে হচ্ছে কেউ তাঁকে মেরেছে।
মদনাহাট জেলেপাড়ায় চিকিৎসা দিচ্ছিলেন চিকিৎসক অলিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে এটা চিকুনগুনিয়া।’ তিনি আরও বলেন, তাদের রক্তসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিসিসি (বিআইটিআইিড) পরীক্ষা করা হবে। তখন শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদ আহমেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার তারা ৯৫ জন রোগীর চিকুনগুনিয়া শনাক্ত করেছেন। সব মিলিয়ে ১১০ জন বাসিন্দা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে তাঁর ধারণা। তাদের আক্রান্তদের মধ্যে মধ্যবয়সী নারী ও পুরুষ বেশি। তাঁদের চিকিৎসার জন্য আট সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছেন বলে জানা তিনি।
সোনাইছড়ি ইউনিয়নের মদনাহাট থেকে আড়াই কিলোমিটারে দূরের পাহাড়ের ধারে সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পল্লি। ওই গ্রামে গত ১২ জুলাই নয় শিশু হামে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সে সময় শিশুসহ ১৬০ জন শিশু এ রোগে চিকিৎসা নিয়েছিল।