বিএনপির গণ-অভ্যুত্থানকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বিএনপি এখন ঘরে বসে গণ-অভ্যুত্থান ও গণ-আন্দোলনের স্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। কারণ, বিএনপির গণ-অভ্যুত্থান শব্দটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আজ সোমবার কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত দলীয় সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংগঠনিকভাবে বিএনপি এলোমেলো দল। কিন্তু জনসমর্থনের দিক থেকে বিএনপিকে দুর্বল ভেবে বসে থাকলে চলবে না। বিএনপিকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মনে করে কাজ করতে হবে। জেতার আগে জিতে গেলে চলবে না। তাহলে চরম মাশুল দিতে হবে।
মানুষ বুঝে গেছে কোন সরকারে উন্নয়ন হয়
কক্সবাজারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ মেরিন ড্রাইভ সড়ক চালু করেছে। জর্ডানের রানি সেদিন তাঁর দেশ থেকে সরাসরি কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমেছেন। মাঝখানে ঢাকা, চট্টগ্রামে ঢুঁ মারতে হয়নি তাঁকে। এখানে বিদ্যুৎ প্রকল্প হচ্ছে, ট্রেন আসছে, আরও কত কিছু হচ্ছে। কাজেই সাধারণ মানুষ বুঝে গেছে কোন সরকার ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়।
অনুষ্ঠানে বেগম রাবেয়া বছরী, উম্মে কুলসুম, আসমাউল হুসনা, আসাদ উল্লাহ ও ওয়াহিদ রুবেল নামে পাঁচজনের কাছে নতুন সদস্য ফরম বিতরণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী সদস্য নয়
নতুন সদস্য সংগ্রহ প্রসঙ্গে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো চিহ্নিত ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে আওয়ামী লীগের সদস্য করা যাবে না। দল ভারী করার জন্য খারাপ লোক দিয়ে পকেট ভারী করবেন না। কারণ, আওয়ামী লীগে কোনো খারাপ লোকের প্রয়োজন বা স্থান নেই। তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহে প্রধান টার্গেট হিসেবে রাখতে হবে ১৮ বছরের তরুণ ও নারীদের। কারণ, এরাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের হাতিয়ার। সদস্য সংগ্রহের ফরম বাড়ির স্টোররুমে ফেলে রাখবেন না। কেউ নিজ থেকে আসবে না। আপনাদেরই তাদের কাছে যেতে হবে।
বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল রোববার অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের সময়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমে গেছে। রুহুল কবির রিজভী এমন অভিযোগের সমালোচনা করে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, না জেনে, না বুঝে রিজভী সাহেব অভিযোগ তুলছেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও অজ্ঞতার পরিচয়। মূলত ফায়দা লোটার জন্য তিনি এসব বলে বেড়াচ্ছেন। কারণ বিএনপি সরকারের সময়ে দেশে রেমিট্যান্স ছিল ছয় বিলিয়ন ডলারের নিচে। আর রপ্তানি আয় ছিল আট বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এখন রেমিট্যান্স হচ্ছে ৩২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আর রপ্তানি আয় ৩৪ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে সরকার।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম বাহাউদ্দিন নাসিম, এ কে এম এনামুল হক শামিম। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কক্সবাজারের দলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদি, সাইমুম সরওয়ার, আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব) ফোরকান আহমদ প্রমুখ।