ঐশীর বয়স পরীক্ষা
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বাবা-মা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ঐশী রহমান অপ্রাপ্তবয়স্ক কি না, তা জানতে তাকে পরীক্ষা করেছেন চিকিৎসকরা।
ঐশী রহমানকে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর পর তার বয়স নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ঐশীকে রিমান্ডে নেয়ার সমালোচনা করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানও।
এই সমালোচনার মধ্যে মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের কাছে ঐশীর বয়স পরীক্ষার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
হাকিম তানবীর আহমেদ ওই আবেদন মঞ্জুর করায় বুধবার ঐশীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ, যাদের হেফাজতে এখন রয়েছে এই কিশোরী।
অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী ঐশীর বয়স ওই বিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী ১৮ বছর হয়নি।
তবে ঐশী গত শনিবার পল্টন থানায় আত্মসমর্পণের সময় নিজের বয়স ১৮ বছর বলেছিল বলে জানান ওই থানার এসআই শফিউল্লাহ প্রধান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “বয়স পরীক্ষার জন্য দুপুরে ঐশীকে নিয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশ।”
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ‘দ্রুত’ এ ফলাফল জানা যাবে।
ঐশীর বাবা পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান এবং মা স্বপ্না বেগমের লাশের ময়না তদন্তও করেছিলেন ডা. সোহেল।
এদিকে ঐশীকে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যম শিশু আইন ও তথ্য অধিকার আইন লঙ্ঘন করছে অভিযোগ করে তার প্রতিকার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন তার আইনজীবী মাহবুব হাসান রানা। বৃহস্পতিবার এর শুনানি হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চামেলীবাগের ফ্ল্যাট মাহফুজ ও স্বপ্নার ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। দুই সন্তান ও এক শিশু গৃহকর্মী নিয়ে তারা ওই বাসায় থাকতেন।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ছোট ভাই ও গৃহকর্মীকে নিয়ে ঐশী বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরদিন ভাইকে ফেরত পাঠালেও সে আসেনি।
ঐশীর সন্ধান না পেয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাকে সন্দেহ করে পুলিশ। শনিবার নিজেই ধরা দেয়ার পর রোববার আদালতের মাধ্যমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পায় তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে ঐশী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।
ঐশীকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের সমালোচনা করে মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ করেছে, এর মাধ্যমে শিশু অধিকার আইন লঙ্ঘন হয়েছে।
ঐশীর পাশাপাশি শিশু গৃহকর্মীকে রিমান্ডে নেয়ারও সমালোচনা উঠেছে।