পরিমলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিল ধর্ষিত ছাত্রী

Parimaljসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে রুদ্ধদ্বার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধর্ষিত ছাত্রী। বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই ছাত্রীর সাক্ষ্য নেন বিচারক আরিফুর রহমান।

রুদ্ধদ্বার এজলাসে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত আসামি পরিমল জয়ধরের সামনেই সাক্ষ্য দেন ওই ছাত্রী। বিচারক ছাড়া তথন সেখানে ছিলেন আসামির আইনজীবী, ওই ছাত্রীর ব্যক্তিগত আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর।

ওই ছাত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণের আগে বিচারকের নির্দেশে অন্য সবাই এজলাস ছেড়ে যান। ধর্ষিত ছাত্রী সাক্ষ্য দেয়ার পর তাকে জেরা করেন পরিমলের আইনজীবী মাহফুজ মিয়া।

ধর্ষিতা ছাত্রীর সাক্ষ্য বিচারকের খাস কামরায় নিতে গত গত ১১ জুন বাদি পক্ষ আবেদন করলে আদালত তাতে সায় দেয়।

খাস কামরায় না নিয়ে এজলাসে সাক্ষ্য নেয়ার বিষয়ে ওই ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি ফোরকান মিয়া এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “খাসকামরা আয়তনে ছোট হওয়ার দরজা বন্ধ করে সবাইকে বের করে দিয়ে এজলাসেই সাক্ষ্য নেন বিচারক।”

নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলায় ক্যামেরা ট্রায়ালের বিধান থাকলেও আইনজীবী ও বিচারকদের মধ্যে এর চর্চা দেখা যায় না বললেই চলে।

আইনের ২০(৬) ধারায় বলা রয়েছে- “কোনো ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিংবা ট্রাইব্যুনাল স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে করলে এই আইনের ধারা ৯-এর অধীন অপরাধের (ধর্ষণ মামলার বিচার) বিচার কার্যক্রম রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত করতে পারবে।”

আলোচিত এই মামলায় এনিয়ে চারজনের সাক্ষ্য নেয়া হল। গত ৪ জুলাই ওই ছাত্রীর সাক্ষ্য দেয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি। তবে ওই ছাত্রীর মা সেদিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

ছাত্রীর সাক্ষ্য নেয়ার পর পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর দিন রেখেছেন বিচারক।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার বাংলা বিভাগের শিক্ষক পরিমলের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর আন্দোলনের মুখে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।

ভিকারুননিসার বসুন্ধরা ক্যাম্পাসের সাবেক শিক্ষক পরিমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১১ সালে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।ঘটনাটি জেনে আন্দোলনে ফেটে পড়েন ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। পরিমলকে রক্ষার অভিযোগ তুলে তৎকালীন অধ্যক্ষ হোসনে আরাকে অপসারণের দাবিও তোলেন তারা।

২০১১ সালের ৫ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে বাড্ডা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পরিমল, অধ্যক্ষ হোসনে আরা এবং স্কুলের বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমানকে আসামি করে মামলা করেন।

ওই বছরের ১৪ অগাস্ট পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১২ সালের ৭ মার্চ আদালত পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে অন্য দুই আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়।

মামলা দায়েরের দুদিন পর কেরানীগঞ্জের একটি বাড়ি থেকে পরিমলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০১১ সালের  ১১ জুলাই তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পরিমল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার লাটেংগা গ্রামের বাসিন্দা ক্ষিতিশ জয়ধরের ছেলে। তিনি ২০১০ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখায় শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ