অস্ত্রোপচারের কারণে আসেননি আমানুর
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে হাজির না করায় তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল। পাইলস অপারেশন হওয়ায় ফারুক এখন ভ্রমণ করতে পারবেন না বলে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এই মামলায় আজ সোমবার তৃতীয়বারের মতো সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আজ সাক্ষ্য দিতে মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুন হাজিরা দেন। কারাগারে আটক আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনে থাকা আসামি মাসুদুর রহমান, ফরিদ ও নুরু হাজির হন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত পত্রে জানানো হয় মামলার প্রধান আসামি সাংসদ আমানুরের পাইলস অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকেরা তাঁকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর শারিরীক অবস্থা ভ্রমণ উপযুক্ত নয়। তাই তাঁকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না। পরে বিচারক মো. আবুল মনসুর মিয়া সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ২২ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
সাংসদ আমানুরকে পরপর তিনটি সাক্ষীর তারিখে হাজির না করাকে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার কৌশল বলে মনে করছেন মামলার বাদী পক্ষ। তাদের মতে এর আগে অসুস্থতার নানা অজুহাতে আমানুরকে আটবার আদালতে হাজির করা হয়নি। তাই মামলাটি অভিযোগ গঠন করতেই প্রায় ১০ মাস সময় নষ্ট হয়েছে। মামলার তারিখ এলেই আমানুর অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এখন সাক্ষ্যগ্রহণের সময়ও তারা একই কৌশল নিয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ টাঙ্গাইলে তাঁর কলেজপাড়া এলাকায় বাসার সামনে পাওয়া যায়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। প্রথমে থানা-পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলার তদন্ত করে। ২০১৪ সালের আগস্টে এ মামলার আসামি আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন। আদালতে তাঁদের স্বীকারোক্তিতে সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর তিন ভাইয়ের এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপর আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আমানুর ও তাঁর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সানিয়াত খানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।