বিশ্বকাপ ড্র নিয়ে কে কী বললেন
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ২০১৮ বিশ্বকাপের ড্র হওয়ায় শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ। নিজ গ্রুপ নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট, কেউ আবার চিন্তিত। মস্কোর স্টেট ক্রেমলিন প্যালেসে ৩২টি দলের গ্রুপ নিশ্চিত হওয়ার পর নানা রকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কোচ, কিংবদন্তি, এমনকি সংবাদমাধ্যম। আসুন দেখে নিই কে কী বললেন—
‘এ’ গ্রুপ (রাশিয়া, সৌদি আরব, মিসর, উরুগুয়ে)
‘আসলে বলতে পারছি না আমি খুশি, না বেজার। ড্রয়ের আগে এবং পরের মানসিকতা পাল্টায়নি। শুধু উরুগুয়েকে পাওয়ায় একটু হেসেছি, কারণ ওরা আমাদের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলতে চেয়েছিল। আমরা রাজি হয়নি। অবশেষে ওরা আমাদের ধরে ফেলল’—রাশিয়া কোচ এস্তানিসলাভ চেরচেসোভ।
‘শুক্রবারের ড্রয়ে এর থেকে ভালো ফল আশা করতে পারত না ফারাওরা’—মিসরের সংবাদমাধ্যম আল আহরাম।
‘উরুগুয়ে ছোট আয়তনের দেশ হলেও ইতিহাসসমৃদ্ধ। তাই সবার নজর কাড়ার যোগ্যতা রয়েছে’—উরুগুয়ে দলের সহকারী কোচ কেলসো ওটেরো।
‘বি’ গ্রুপ (পর্তুগাল, স্পেন, মরক্কো, ইরান)
‘পর্তুগালকে মেনে নিতে হবে যে তারা অন্যতম ফেবারিট। কিন্তু আরেকটু গভীরে তাকালে বোঝা যাবে, গ্রুপটা অনেক কঠিন। স্পেন সহজাতভাবেই ফেবারিট, যেমনটা সব সময় বলে এসেছি’—পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস।
‘পর্তুগাল অসাধারণ দল। বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন। মরক্কোর বেশির ভাগ খেলোয়াড় ইউরোপে খেলছে এবং আইভরি কোস্টকে তারা ছিটকে ফেলে উঠে এসেছে, একটি ম্যাচও হারেনি। ইরানও বাছাইপর্বে কোনো গোল হজম করেনি’—স্পেন কোচ হুলেন লোপেতেগু।
‘আমি ব্যক্তিগতভাবে খুশি, কারণ স্পেন এবং পর্তুগাল আমার জন্য দুটি বিশেষ দল। ইরানের জন্য এটা সত্যিই অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, মনে আশা নিয়ে খেলে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে হবে’—ইরান কোচ কার্লোস কুইরোজ।
‘ইরানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটাই হবে ভাগ্যনির্ধারণী। গ্রুপটা দেখে অনেক কঠিন মনে হচ্ছে, কিন্তু ফুটবলে অসম্ভব বলে কিছু নেই’—মরক্কো কোচ হার্ভে রেনার্ড।
‘সি’ গ্রুপ (ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, পেরু, ডেনমার্ক)
‘কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এখানে কাউকে বিচার করতে যাওয়া ঠিক হবে না। প্রতিপক্ষকে সহজভাবে দেখে বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ নেই। এটা হবে দারুণ এক ভুল’—ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নোয়েল লে গ্রায়েত।
‘ফ্রান্স অনেক শক্তিশালী দল হলেও তাঁদের আঘাত করার জায়গা আছে। বাকি দুটি (অস্ট্রেলিয়া, পেরু) সমন্ধে আমি খুব বেশি কিছু জানি না, তবে ড্র ভালো হয়েছে’—ডেনমার্কের ডিফেন্ডার পিটার অ্যানকেরসেন।
‘ডি’ গ্রুপ (আর্জেন্টিনা, ক্রোয়েশিয়া, আইসল্যান্ড, নাইজেরিয়া)
‘একেবারে খারাপ গ্রুপে পড়িনি। আমাদের উন্নতি করতে হবে…যতটা খারাপ খেলে আসছি, সেভাবে খেলা যাবে না’—আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
‘সমর্থকদের আমি একটা বিষয় নিশ্চিত করতে পারি যে আর্জেন্টিনাকে আমরা গর্বিত করবই। আমার কাছে রয়েছে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়, যেটা একটা সুবিধা’—আর্জেন্টিনা কোচ হোর্হে সাম্পাওলি।
‘এটা অবিশ্বাস্যরকমের কঠিন গ্রুপ। দারুণ এক কঠিন অভিজ্ঞতা হবে’—আইসল্যান্ড অধিনায়ক অ্যারন গুনারসন।
‘আমরা আরও ভালো গ্রুপে পড়তে পারতাম। কিংবা আরও খারাপও হতে পারত। আপাতত নকআউট পর্বে ওঠা নিয়ে ভাবছি। সন্দেহ নেই আর্জেন্টিনাই ফেবারিট’—ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাটকো দালিচ।
‘প্রথম রাউন্ডে ব্রাজিল ও জার্মানিকে না পাওয়ায় ভালো লাগছে। আমাদের পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে’—নাইজেরিয়া স্ট্রাইকার ওডিয়ন ইগহালো।
‘ই’ গ্রুপ (ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকা, সার্বিয়া)
‘অন্য গ্রুপগুলো বেশি কঠিন। আমাদেরটা সোজাসাপ্টা। তিতেকে তাঁর পরিকল্পনা সাজাতে হবে’—ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার রোনালদো।
‘গ্রুপ পর্যালোচনার চেয়ে নিজেদের ঠিক করাই বেশি জরুরি। সবাই শক্ত প্রতিপক্ষ বলেই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে। মাত্র ১৬ ম্যাচ হলো দায়িত্বে আছি, যেটা ক্লাব পর্যায়ে মাত্র তিন মাসের সময়’—ব্রাজিল কোচ তিতে।
‘এই গ্রুপে ব্রাজিলই একমাত্র প্রতিপক্ষ নয়, বাকিরাও বেশ কঠিন দল’—সুইজারল্যান্ড কোচ ভ্লাদিমির পেটকোভিচ।
‘এফ’ গ্রুপ (জার্মানি, মেক্সিকো, সুইডেন, দক্ষিণ কোরিয়া)
আমি মোটেও ভীত নই। শিরোপা ধরে রাখার ভিত্তিটা গ্রুপ পর্বেই সেরে নিতে হবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য’—জার্মানি কোচ জোয়াকিম লো।
‘বলটা দেখতে গোলাকার। কঠোর পরিশ্রম করে উন্নতি করতে পারলে আমার মনে হয় ২০১৪ বিশ্বকাপের অশ্রু রূপান্তরিত হবে হাসিতে’—দক্ষিণ কোরিয়া স্ট্রাইকার সং হিউং-মিন।
‘জার্মানি পরিষ্কার ফেবারিট। মেক্সিকো আর দক্ষিণ কোরিয়াকে সেভাবে জানি না, কিন্তু তাদের জানার শুরুটা হবে এখন থেকেই’—সুইডেন কোচ জ্যান অ্যান্ডারসন।
‘জি’ গ্রুপ (বেলজিয়াম, পানামা, তিউনিসিয়া, ইংল্যান্ড)
‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। একমাত্র বিপজ্জনক খেলোয়াড় মেসি’—পানামা কোচ হারনান দারিও গোমেজ।
‘বেলজিয়াম সমন্ধে আমরা সবাই জানি। যূথবদ্ধ হিসেবে তাঁদের দলটাই সবচেয়ে ভালো। ১৯৯৮ আসরে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটাও মনে পড়েছে। আমাদের সত্যিই অনেক পরিশ্রম করতে হবে। কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়’—ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট।
‘এটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং গ্রুপ। ভ্রমণের কথা চিন্তা করলে এটাই সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ গ্রুপ’—বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
‘এইচ’ গ্রুপ (পোল্যান্ড, সেনেগাল, কলম্বিয়া, জাপান)
‘কী খবর ভাই, কেমন আছো? গত বিশ্বকাপে তোমার দুর্দান্ত গোলটা মনে আছে। আশা করি, রাশিয়ায় আমার গোল তুমি মনে রাখবে’—টুইটারে হামেশ রদ্রিগেজকে উদ্দেশ করে পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডভস্কি।
‘একটা ভারসাম্যপূর্ণ গ্রুপ চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি। বিশ্বকাপে আসলে অতীত কোনো বিষয় নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, কলম্বিয়া খেলছে’—কলম্বিয়া কোচ হোসে পেকারম্যান।
‘আমরা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে চাই। এটাই দলের লক্ষ্য’—সেনেগাল মিডফিল্ডার চেইখু কয়োটে।