ছাত্রদলের প্রবাসী নেতার নির্দেশে আদম ব্যবসায়ীকে হত্যা
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ছাত্রদলের প্রবাসী এক নেতার নির্দেশে বনানীর আদম ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন মুন্সি হত্যায় জড়ান হেলাল। গ্রেপ্তার হওয়া হেলালের দেওয়া তথ্যের বরাতে এ কথা জানান কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। আজ বুধবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ইউরোপের একটি দেশে পলাতক এক সন্ত্রাসী হেলালকে এই হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব দেন। তাঁদের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থের চুক্তি হয়। হেলাল একজন পেশাদার খুনি। এই হত্যাকাণ্ডে মোট ছয়জন অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের সবার কাছে পিস্তল ছিল। হেলালকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুলশান থানার কালাচাঁদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি পিস্তল ও নয়টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া হেলাল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। হেলাল বলছেন, তিনি এই হত্যাকাণ্ডের অপারেশন কমান্ডার ছিলেন। তিনি ও আরেকজন ঘটনাস্থলের বাইরে থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। মুখোশধারী কয়েকজন ভেতরে গিয়ে গুলি করে সিদ্দিককে হত্যা করেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পিচ্চি আল আমিন ও সাদ্দাম নামের দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদেরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারে ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে। তিনি বলেন, হেলাল ছাত্রদলের মধ্যম পর্যায়ের নেতা ছিলেন। তিনি একাধিক হত্যা মামলার আসামি। আর এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ওই প্রবাসীও ছাত্রদলের একজন নেতা।
সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডের পেছনে শত্রুতা বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না—জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, এর পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। এই ঘটনায় ২৫ থেকে ২৬টি গুলি ছোড়া হয়েছে। হত্যার জন্য এত গুলি করার কথা নয়। ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে হেলালকে আদালতে পাঠানো হবে। তাঁকে রিমান্ডে নিলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
সিদ্দিক হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ওই প্রবাসী নেতা সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে সারা দেশে জ্বালাও–পোড়াওয়ের ঘটনায় তিনি একাধিক মামলার আসামি। তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনিও হয়তো সিদ্দিককে হত্যা করার জন্য অন্য কারও সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকতে পারেন।
গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজধানীর বনানীতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে সিদ্দিক মুন্সিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বনানী বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর বাসায় সিদ্দিক মুন্সির জনশক্তি রপ্তানির একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।