ডাকসু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি উপাচার্যের
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত এক সেমিনারে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূল ধারার গণমাধ্যমের সম্পর্ক, সমস্যা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। একই সঙ্গে সমিতির নতুন কমিটির কাছে পুরোনো কমিটির দায়িত্ব হস্তান্তর পর্ব। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গ।
ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ডাকসু না হওয়ার ২৭ বছরের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমরা ডাকসু নির্বাচন করব ইনশা আল্লাহ।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তা-ই গৃহীত হবে। কিন্তু কারও উসকানিতে পড়লে নষ্ট হয়ে যাবে। বিগত সময়ে নষ্ট হয়েছিল।’ ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনকারীদের স্লোগানের সমালোচনা করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা এ ধরনের হঠকারী উসকানিমূলক বক্তব্যে পড়ব না। ডাকসু নির্বাচন দিতে হবে, এটা যেমন সত্য, ২৭ বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না, এটাও সত্য। এর পেছনের কারণগুলো আমরা বিশ্লেষণ করছি।’
এর আগে অন্য অতিথি বক্তারাও ডাকসু নিয়ে আলোচনা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলাম, তখন দুবার ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন যে নাটক হতো, যেসব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হতো, তা এখন আর হয় না। ডাকসু সংগ্রহশালার এখন কী অবস্থা তা-ও জানি না। ডাকসু থাকলে ছাত্ররা নিজেরাই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকে। যাঁরা নেতৃত্ব দেন, তাঁদেরও দায়বদ্ধতা থাকে।’
সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান বলেন, ২৭ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন বন্ধ হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নির্বাচন করতে বলেছেন, উচ্চ আদালতের রায়ে সিনেট পূর্ণাঙ্গ করতে বলা হয়েছে। এরপরও কেন নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে না, তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অভিভাবকের’ কাছে জানতে চান।
পরে সাবেক সভাপতি ও নিউজটুয়েন্টিফোরের বার্তা সম্পাদক বোরহানুল হক সম্রাটও তাঁর বক্তব্যে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল।
‘সামাজিক মাধ্যম বনাম গণমাধ্যম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সামাজিক মাধ্যম এখন নিঃসন্দেহে সব মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ব্যক্তিগত বিষয় থেকে শুরু করে সামাজিক-রাজনৈতিক সব ধরনের বিষয় নিমেষেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তথ্য ও মতামত প্রকাশে এর দিগন্ত অবারিত। সংবাদমাধ্যম যখন অনেক ‘সত্য’ প্রকাশ করতে চায় না, সোশ্যাল মিডিয়া তখন বিনা দ্বিধায় সেসব তথ্য প্রকাশ করতে পারে। একই সঙ্গে এর দুর্বল দিক হলো এর মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে, যা প্রাণঘাতী দাঙ্গায়ও রূপ নিয়েছে বাংলাদেশে।