সরকারের চেক হস্তান্তর নাটক: ফখরুল
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে দিতে সরকার ‘আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা অর্থ’ ফিরিয়ে আনার নামে নাটক সাজিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বুধবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
“ক্রিকেটে যেমন অ্যাওয়ার্ডের চেক বড় করে দেয়া হয়, তেমনি গতকাল এক অনুষ্ঠানে সরকারের এর্টনি জেনারেল কোকোর নামে মিথ্যা বানোয়াট চেক বানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে দিয়েছেন।”
সরকারের ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
মঙ্গলবার রূপসী বাংলা হোটেলে দুদক আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ‘পাচার করা’ অর্থের দ্বিতীয় কিস্তি কয়েকদিন আগে দেশে এসেছে। তারই একটি প্রতীকী চেক তিনি দুদকের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের কাছে হস্তান্তর করেন।
অর্থ পাচারের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোকো পাঁচ বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতেই মামলার রায় হয়। বিএনপির দাবি, ওই মামলা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে ফখরুল বলেন, “দেশ-বিদেশের মানুষের দৃষ্টি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে। আমরা বলেছি, নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজন করলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। অন্যথায় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।”
এই দাবিতে চলমান আন্দোলন ‘দানা’ বেঁধে উঠছে দাবি করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জনগণ সেই দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সরকার এটা বুঝতে পেরে এখন জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার নানা চক্রান্তে নেমেছে। কোকোর অর্থ ফিরিয়ে আনার মিথ্যা প্রচারণা তারই অংশ।”
কোকোর অর্থ পাচার মামলাটি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “জিয়া পরিবার ও কোকোকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এ মামলা সাজানো হয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে আত্মাপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে ওই রায় দেয়া হয়েছে।”
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, ‘‘পত্র-পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। কানাডায় পদ্মাসেতুর দুর্নীতির অর্থ কেলেঙ্কারির মামলা চলছে। পদ্মসেতু দুর্নীতির অর্থের কে কতো ভাগ পাবে, তার খবর গণমাধ্যমে এসে গেছে। কেবল তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী যে মন্ত্রীকে দেশপ্রেমিক উপাধি দিয়েছেন, তার পারসেন্টেজের কথাও এসে গেছে।’’
এসব ‘অপকীর্তি’ ও বিরোধী দলের আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিতেই সরকার ‘মিথ্যা অপপ্রচার’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ফখরুলের।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, আইন বিষয়ক সহ সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, মহানগর যুগ্ম আহবায়ক কাজী আবুল বাশার সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।