দিয়াজ হত্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আনোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক এ এইচ এম মশিউর রহমান এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর আনোয়ার হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন আনোয়ার হোসেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আজ আত্মসমর্পণ করে আবারও জামিনের আবেদন করেন।
নিহত দিয়াজের বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী বলেন, জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু কর্মী অস্ত্র নিয়ে আদালত পাড়ায় আসেন। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ারা হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে হাটহাজারী এলাকায় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে ওই শিক্ষকের সমর্থকেরা। বেলা দেড়টা থেকে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে তাঁরা অবরোধ করে রাখেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই যাতায়াতকারী যাত্রীরা।
গত বছরের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ২২ দিন আগে মিয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের চার নেতার বাসায় তাণ্ডব চালানো হয়। ৯৫ কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির (বর্তমানে কমিটি স্থগিত) অনুসারী নেতা-কর্মীরা ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যাওয়ার আগে দিয়াজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে—এই অভিযোগ এনে ২৪ নভেম্বর তাঁর মা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। অন্য আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু, সহসভাপতি আবদুল মালেক, মনসুর আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরমান, প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম, আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য আরিফুল হক এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামশেদুল আলম চৌধুরী।
দিয়াজের মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয় গত বছরের ২১ নভেম্বর। ২৩ নভেম্বর পুলিশ জানায়, দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে—এমন আলামত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মেলেনি। পরে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজকে শ্বাস রোধ করে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।
এদিকে গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন দিয়াজ হত্যা মামলার ১০ আসামির ৭ জন । লিখিত বক্তব্যে তাঁরা বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার নকশার অংশ এই মামলা।’