মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি চলচ্চিত্র পরিচালক গ্রেপ্তার
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ নামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গিয়ে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পরিচালক অনন্য মামুন। গতকাল রোববার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় স্থানীয় পুলিশ সহযোগী মিরাজসহ অনন্য মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অনন্য মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি অনুষ্ঠানের নাম করে ৫৭ জনকে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। পুলিশ এই ৫৭ জনকেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম আজ সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের কানে এসেছে। আমরা পুরো বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখছি। দেশের বাইরে এসে এমন ঘটনায় জড়ানোর ব্যাপারটি খুবই অস্বস্তিকর।’
গত শনিবার কুয়ালালামপুরের উইজমা এমসিএ সেন্টারে ‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন অনন্য মামুন। এ অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক তিনি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশি শিল্পীদের একটি দল ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই দলে ছিলেন পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর, চিত্রনায়িকা আইরিন, মিষ্টি জান্নাত, চিত্রনায়ক নিরব, ইমন, আমান রেজা, মডেল ও অভিনয়শিল্পী আনিকা কবির শখ, আশনা হাবিব ভাবনা, কবির তিথি ও গানের দল চিরকুট।
‘সিনেমাটিক বাংলাদেশি নাইটস’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন আরেক চলচ্চিত্র নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের আড়ালে অনন্য মামুন আদম পাচারের মতো অপরাধ করছে বলে তারা জেনেছেন, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানতাম না। গতকাল বিকেলে হঠাৎ আমাদের দলের কয়েকজন শিল্পী আদম পাচারের বিষয়টি জানতে পারেন। মালয়েশিয়ার পুলিশের কয়েকজন সদস্য আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। বড় ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে গেছি। সবাইকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, অনুষ্ঠানে আসা কোনো শিল্পীর কোনো সমস্যা হয়নি।’
এই চলচ্চিত্র পরিচালক বলেন, ‘পুরো ব্যাপারটি নিয়ে ভীষণ লজ্জিত সবাই। বাইরের দেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আড়ালে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা শিল্পীরা একরকম মানসম্মান নিয়ে বেঁচে গেছি।’
দেবাশীষ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, এ অনুষ্ঠানের নাম করে অনন্য মামুন ৫৭ জনকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আটক সবাই তা মালয়েশিয়ার পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।’
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা খুবই গুরুতর অপরাধ। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশি সিনেমার যে পরিচালক ও কলাকুশলী দেশের বাইরে যাবেন, তাঁদের সবাইকে অযথা হয়রানির শিকার হতে হবে। দেশে ফেরার পর আমরা অনন্য মামুনের এমন অপরাধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব।’