পুলিশ বলছে এক কথা পরিবার বলছে অন্যকথা
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: যশোরে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে ‘সংঘর্ষে’ আজ বৃহস্পতিবার ভোরে দুজন ‘তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী’ গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। অন্যদিকে আহতদের একজনের পরিবার বলছে, পুলিশ গত বুধবার এদের ধরে মেরে হাত পা ভেঙে দিয়েছে।
পুলিশের দাবি আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের এড়েন্দা গ্রামে একটি মেহগনি বাগান থেকে আহত অবস্থায় দুজন সন্ত্রাসীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তারা একটি দেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শাটারগান, এক রাউন্ড পিস্তলের গুলি এবং ১৯টি বোমা উদ্ধার করে। আহত ওই দুই ব্যক্তি হলেন শিশির ঘোষ (৩৫) ও রাব্বী ইসলাম শুভ (২৭)। শিশির যশোর শহরের ষষ্টীতলাপাড়া এলাকার নিত্য ঘোষের ছেলে এবং রাব্বী ইসলাম শুভ শহরের বেজপাড়া ফুড গোডাউন এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে। তাঁদের যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অবশ্য আহত শিশিরের বাবা নিত্য ঘোষ বলেছেন, ‘বুধবার ভোররাতে শিশির ও শুভকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁদের যশোরে আনা হয়। পরে পুলিশ তাঁদের চোখ বেঁধে মারপিট করে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে।’
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোররাত তিনটার দিকে যশোরের ছুটিপুর-এড়েন্দা সড়কের পাশে একটি মেহগনি বাগানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই দল সন্ত্রাসীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলি বিনিময় ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ সময় শিশির ও শুভকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশির ও শুভ সন্ত্রাসী। গত শনিবার যশোর শহরের টিবি ক্লিনিক এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত দোকানি টিপু সুলতান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এ ছাড়া, তাঁদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, ডাকাতি, ছিনতাই, বোমাবাজিসহ অন্তত ১৫টি করে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে আটটি মামলায় তারা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় শিশির ও শুভকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। শিশিরের দুই পা ও বাম হাত এবং শুভর দুই পা ও ডান হাত ভেঙে গেছে। তাঁদের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বজলুর রশিদ বলেন, ‘তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের দুজনকে রক্ত দেওয়া দেওয়া হয়েছে। দুজনের এক হাত করে এবং দুই পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুজনের দুই পায়ের রক্তনালি ছিঁড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের দুজনকে ঢাকায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’