বন্দিজীবনের এক বছর

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: দেখতে দেখতে কারাগারে বন্দিজীবনের এক বছর পূর্ণ হলো তাপস পালের। পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর রোজভ্যালি-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছর ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে ভারতের বাংলা ছবির জনপ্রিয় এই অভিনেতা ও তৃণমূল সাংসদকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তারপর তাঁর ঠাঁই হয় ওডিশা রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরের কারাগারে। এখনো তিনি সেখানেই আছেন। তবে অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আছেন ভুবনেশ্বরের একটি সরকারি হাসপাতালে। তাঁকে দেখাশোনা করছেন স্ত্রী নন্দিনী পাল।

পশ্চিমবঙ্গে সারদা-কাণ্ডের মতো আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা এই রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতি মামলা। রোজভ্যালি স্বল্প সঞ্চয়ের একটি আর্থিক সংস্থা বা চিটফান্ড প্রতিষ্ঠান। এই সংস্থায় অসংখ্য মানুষ অর্থ জমা রেখে প্রতারিত হন। এই আর্থিক দুর্নীতির মামলা এখনো চলছে। মামলার দায়িত্ব নিয়েছে সিবিআই। তাপস পালের সঙ্গে আরও গ্রেপ্তার করা হয় রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে।

রোজভ্যালি আর্থিক দুর্নীতির খবর ফাঁস হওয়ার পর নাম উঠে আসে তাপস পালের। তাপস পাল রোজভ্যালি সংস্থার চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ছিলেন। এই সংস্থা থেকে তাপস পাল আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। এ অভিযোগে সিবিআই তাপস পালকে জেরা করে। কিন্তু তাপস পাল রোজভ্যালি থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের কথা অস্বীকার করেন। এরপর তাপস পালের দক্ষিণ কলকাতার বাসা তল্লাশি করে সিবিআই এ-সংক্রান্ত কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে। সিবিআই বলেছে, রোজভ্যালি থেকে তাপস পালের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের তথ্য-প্রমাণ তাদের হাতে আছে। তিনি এই আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন নগদ এবং ব্যাংকের মাধ্যমে।

গ্রেপ্তারের আগে তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে কলকাতার সল্ট লেকের সিবিআই কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় সিবিআই। সেই নির্দেশ মেনে তাপস পাল গত বছর ৩০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় সিবিআই অফিসে আসেন। সিবিআইর কর্মকর্তারা তাঁকে দুই দফায় চার ঘণ্টা জেরা করেন। তাঁর সব কথা রেকর্ড করা হয়। কিন্তু তাপস পাল সেদিন সিবিআইর অধিকাংশ প্রশ্ন এড়িয়ে যান। অনেক প্রশ্নের জবাব দেননি। এরপর সিবিআই তাপস পালকে গ্রেপ্তার করে পাঠিয়ে দেয় ভুবনেশ্বর কারাগারে।

এদিকে গত এক বছরে কয়েকবার আদালতে তাপস পালের জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দেন। তাপস পালের আইনজীবী মিলন কানুনগো বলেছেন, এ বছর এপ্রিল মাসে সিবিআই আদালতে তাপস পালের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র পেশ করে। তিনি তাপস পালের জামিনের জন্য গত জুলাই মাসে ওডিশার হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসে এই আবেদনের রায় দেওয়ার কথা।

আইনজীবী আরও বলেছেন, তাপস পাল এখন অসুস্থ। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও লিভারের রোগে আক্রান্ত। তাই তাঁরা তাপস পালের জীবন রক্ষার জন্য জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

এদিকে আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর তাপস পালের একমাত্র মেয়ে সোহিনী পালের জন্মদিন। সোহিনী এখন মুম্বাইয়ে অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত আছেন। সোহিনী তাঁর জন্মদিনে বাবার কাছে আসতে চেয়েছেন। কিন্তু তাপস পাল নিষেধ করেছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ