বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বিভিন্ন স্থানে বিএনপির মিছিল, সমাবেশ পুলিশি বাধার মুখে পণ্ড হয়ে গেছে। বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে তিন কর্মীকে।
আজ ৫ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের চার বছর পূর্তির দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের উদ্যোগ নেয় বিএনপি। স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়গুলোতে নেতা-কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া, হয়রানি করা ও মিছিলে কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছে। ময়মনসিংহে পূর্বঘোষণা অনুসারে বিএনপি ‘কালো পতাকা’ মিছিল বের করতে পারেনি। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় বিএনপির মিছিলে লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। অপর দিকে খুলনায় মিছিলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিপেটা করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে তিন কর্মীকে।
ময়মনসিংহ থেকে জানা গেছে, পূর্বঘোষণা অনুসারে আজ ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। এ উপলক্ষে জেলা দক্ষিণ বিএনপির কার্যালয় থেকে কালো পতাকা মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। তবে সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয় ও কয়েক নেতার বাড়ি পুলিশ ঘিরে রাখায় দলীয় কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মী আসতে পারেননি।
জেলা দক্ষিণ বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, আজ বেলা ১১টা থেকে দলীয় কার্যালয় থেকে কালো পতাকা মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুলিশ জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহাব আকন্দ, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম আজাদসহ অনেক নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই সব নেতার বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা দেওয়া শুরু করে।
জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ বলেন, ‘গতকাল রাত ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টা পুলিশ আমার বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি করেছে। জেলা দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সভাপতি লিটন আকন্দসহ আরও অনেক নেতার বাড়িতেও পুলিশ তল্লাশির নামে হয়রানি করেছে। বাড়ির বাচ্চারা অসুস্থ থাকার কথা বললেও পুলিশ থামেনি।’
জেলা দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি শামীম আজাদ বলেন, ‘তল্লাশির নামে পুলিশ আমার বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। বাড়ির ভেতরও তারা তাণ্ডব চালায়।’
আজ দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের হরি কিশোর রায় সড়কের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বিপুলসংখ্যক পুলিশ। দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ। কার্যালয়ে যাওয়ার দুই দিকের সড়কের মোড়ে পুলিশি পাহারা।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মুশফিকুর রহমান বলেন, নাশকতার আশঙ্কায় বিএনপির কার্যালয়ে সকাল থেকেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কেউ দলীয় কার্যালয়ে আসতে পারেনি।
এদিকে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় আজ বিএনপির মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। এতে গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়মনসিংহ উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমদ তায়েবুর রহমানসহ কমপক্ষে ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সকালে গৌরীপুর পৌর শহরের সিনেমা হল সড়ক থেকে বিএনপি মিছিল বের করে। মিছিলটি কিছু দূর যেতেই পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশ প্রথমে মিছিলের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এতেও মিছিলটি না থামলে একপর্যায়ে লাঠিপেটা করে। পরে মিছিলটি পণ্ড হয়ে যায়।
খুলনা থেকে জানা গেছে, সেখানেও ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উল্লেখ করে আয়োজিত বিএনপির মিছিলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। খুলনা বিএনপি প্রথমে জেলা শাখা এবং পরে মহানগর শাখা সমাবেশ করে। সমাবেশে নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে এসে যোগ দেন। একটি মিছিলে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ অতর্কিত লাঠিপেটা শুরু করে। এ সময় তিনজন কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, লাঠিপেটা, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে বিএনপি আবার কালো পতাকা হাতে সমাবেশ করেন। এরপর বিএনপি কালো পতাকা হাতে মিছিল করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।