ছাত্রদলের মিছিলে বাধায় দেওয়ায় পুলিশকে পিটুনি
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করার সময় বাধা পেয়ে ছাত্রদলের কর্মীরা চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি মোড়ে পুলিশের এক কনস্টেবলকে পিটিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে বিএনপির সমাবেশে যোগ দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে প্রতিবছর এ দিনটিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে। এ উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী চট্টগ্রাম নগর বিএনপি শুক্রবার বিকেলে দলীয় কার্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়। এ উপলক্ষে দুপুরের পর থেকে কাজীর দেউড়ি মোড়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। কিন্তু দলীয় লোকজন কালো পতাকা প্রদর্শন করতে পারবে না—এ শর্তে পুলিশ কাজীর দেউড়ির মোড় থেকে বিএনপিকে মৌখিকভাবে তাৎক্ষণিক মিছিলের অনুমতি দেয়।
শর্ত মেনে নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেমের নেতৃত্বে বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে একটি মিছিল কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে বের হয়। মিছিলটি কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে প্রায় সাড়ে ৩৫০ গজ দূরে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে পৌঁছে যায়। কিন্তু মিছিলের লেজ তখনো কাজীর দেউড়ি মোড়ে ছিল। সেই মিছিলের পেছনের দিকে ছিলেন নগর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। শর্ত ভঙ্গ করে ছাত্রদলের কিছু নেতা-কর্মী কালো পতাকা প্রদর্শন করছিলেন। তখনই পুলিশের এক সদস্য কয়েকজন কর্মীর কাছ থেকে পতাকা কেড়ে নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালো পতাকা কেড়ে নেওয়ায় ছাত্রদলের সাত-আট সদস্য ওই পুলিশ সদস্যকে ঘোরাও করে কালো পতাকা আবার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্যকে পতাকার কঞ্চি দিয়ে নেতা-কর্মীরা পিটুনি দেন। এরপর অন্য পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। কিন্তু বিক্ষোভ অংশ নেওয়া লোকজনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুলিশ পাল্টা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
নগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মিছিলের শেষভাগে ছিলাম। নাসিমন ভবন চত্বরে যাওয়ার সময় কাজীর দেউড়ি মোড়ে একজন কনস্টেবল আমাদের কাছ থেকে কালো পতাকা ছিনিয়ে নেন। এতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। আমরা একজন কনস্টেবলকে ঠেলে দূরে সরিয়ে নাসিমন ভবন চত্বরের সমাবেশে যোগ দিই।’
কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাজীর দেউড়ি মোড়ে আমাদের একজন কনস্টেবলের ওপর মিছিলকারীরা চড়াও হয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই কনস্টেবলের নাম তিনি জানাতে পারেননি।
বিক্ষোভ সমাবেশ
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, গুম, খুন, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নারকীয় কর্মযজ্ঞে মনে হয় এটি সরকারের একধরনের খেলা। মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত করে উল্লাস প্রকাশ করছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। কিন্তু ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি।
আবুল হাশেম বলেন, আদালতের মাধ্যমে মিথ্যা ঘটনায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। কিন্তু ৫ জানুয়ারি মার্কা আর কোনো নির্বাচন বাংলার মাটিতে হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
সভাপতির বক্তব্য নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। ওই দিন ‘গণতন্ত্র হত্যা’ করে আওয়ামী লীগ। এই দলটি একদলীয় ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে দেশে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ভোটাধিকার, বাক্স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু সুফিয়ানসহ অন্যরা।