অর্থ ফেরতে ফারমার্স ব্যাংকের ব্যর্থতায় টিআইবির উদ্বেগ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের ৫০৮ কোটি টাকাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের আমানতের অর্থ ফেরত দিতে ফারমার্স ব্যাংক ব্যর্থ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে সংস্থাটি আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ সোমবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘ফারমার্স ব্যাংকে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের গচ্ছিত আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর চাহিদা অনুযায়ী ফেরত দিতে ফারমার্স ব্যাংকের ব্যর্থতার ঘটনা শুধু উদ্বেগজনকই নয়, পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্য তা এক অশনিসংকেত। জলবায়ু তহবিলের ৫০৮ কোটি টাকা পুনরুদ্ধারে সরকার, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল ছাড়ে দেরি হলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ও জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি আরও বাড়বে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল গঠনে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তহবিলটি পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও শুদ্ধাচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে সুখ্যাতিসম্পন্ন ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠানে জমা না করে কোন যুক্তিতে, কার স্বার্থে ফারমার্স ব্যাংকে অধিক মুনাফার নামে জলবায়ু তহবিলের মূলধনের প্রায় অর্ধেক অর্থই বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তা যথাযথভাবে তদন্তসাপেক্ষে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’ একই সঙ্গে জলবায়ু তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুসরণের আহ্বান জানায় টিআইবি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তারল্যসংকটের পরিপ্রেক্ষিতে ফারমার্স ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠান তাদের আমানতের বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। ঋণ জালিয়াতিসহ ব্যাংকটির লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বোঝা গ্রাহকদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিসংগত ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’ আমানতের বিপরীতে প্রাপ্য অর্থ গ্রাহকদের ফেরত দেওয়াসহ ব্যাংকটির ঋণ জালিয়াতি ও অন্যান্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন বা ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। ফারমার্স ব্যাংক তথা সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতের স্বার্থে সাবেক পরিচালনা পর্ষদসহ ওই ব্যাংকের শীর্ষ উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা এ উদ্বেগজনক সংকটের জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’