তৃতীয় দ্রুততম হয়েও রুবেলের এত দেরি!
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: মোক্ষম সময়ে ইয়র্কার মারতে ভালোবাসেন যেকোনো পেসার। বিশেষ করে ইনিংসের শেষ দিকে। ৪৮তম ওভারে রুবেল হোসেন ঠিক তা-ই করলেন। তাঁর নিখুঁত নিশানার ইয়র্কারে পিটার মুরের উইকেট ছত্রখান। ক্ষণগণনার শুরু তখন থেকেই।
কিন্তু তেন্দাই চাতারা রুবেলকে অপেক্ষায় রাখেননি। জিম্বাবুয়ের এ পেসার তাঁর পরের বলটা টেনে আনলেন স্টাম্পে, ব্যস, ওয়ানডেতে ‘সেঞ্চুরি’ হয়ে গেল রুবেলের!
অবশ্যই উইকেটের সেঞ্চুরি। সেটা পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে। রুবেলের আগে মাইলফলকটি ছুঁয়েছেন মোহাম্মদ রফিক, আবদুর রাজ্জাক, মাশরাফি বিন মুর্তজা আর সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে সবার আগে শততম উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন স্পিনার রাজ্জাক (৬৯ ম্যাচ)। দ্বিতীয় মাশরাফির লেগেছে ৭৮ ম্যাচ। সাকিবের দরকার হয়েছিল ৮৮ ম্যাচ এবং সবার আগে সেঞ্চুরি করা রফিকের ১০৪ ম্যাচ। রুবেল সেই একই কীর্তি গড়লেন ৮১তম ম্যাচে। অর্থাৎ রুবেল ঢুকে পড়লেন মাশরাফি ও সাকিবের মাঝে—বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডেতে তৃতীয় দ্রুততম ১০০ উইকেটশিকারি।
পরিসংখ্যানটি বাংলাদেশের মনোযোগী ক্রিকেটমোদীদের জন্য বেশ খচখচানির। আমাদের কি বেশ দেরি হয়ে যাচ্ছে না? মানে, ওয়ানডেতে দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকারে মাইলফলকে আমাদের বোলারদের অবস্থান ঠিক কোথায়?
অন্যদের পরিসংখ্যানেই অবস্থান পরিষ্কার। সবার ওপরে থাকা মিচেল স্টার্ক উইকেট শিকারের ‘সেঞ্চুরি’ উদ্যাপন করেছেন ৫২তম ম্যাচে। এ তালিকায় দশম ডেনিস লিলির লেগেছে ৬০ ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়ান পেস কিংবদন্তির থেকে ৪ ম্যাচ বেশি খেলে কুড়িতম অ্যালান ডোনাল্ড। বাংলাদেশে সবার আগে এ কীর্তি গড়া রাজ্জাক সেই একই তালিকায় ৪১তম। রুবেল যে শীর্ষ পঞ্চাশেও নেই, সেটা পরিসংখ্যান না ঘেঁটেও বলা যায়।
অথচ, রুবেল খেলছেন বহুদিন হলো। ২০০৯ সালে ওয়ানডে অভিষিক্ত রুবেলের পরের বছরই অভিষেক ঘটেছে স্টার্কের। মাইলফলকটি ছুঁতে তাঁর সময় লেগেছে ৬ বছর। সেখানে রুবেল সময় নিলেন ৯ বছর। স্টার্কের সঙ্গে তুলনায় ঠিক না গেলেও সময়টা কি বেশি নয়?
কিংবা সাকলায়েন মুশতাকের কথাই ধরুন। পাকিস্তানের এ কিংবদন্তি অফ স্পিনার ১৯৯৫ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর ১০০ উইকেট পেতে সময় নিয়েছেন মাত্র ২ বছর। এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার সাকিবের তা ছুঁতে সময় লেগেছে ৪ বছর। রাজ্জাকের ক্ষেত্রেও একই সময় লেগেছে।
তবে ‘বিশেষজ্ঞ’ স্পিনার সাকলায়েনের সঙ্গে এ তুলনায় ‘অলরাউন্ডার’ সাকিবের ২ বছর সময় বেশি নেওয়া, খুব বেশি চোখে লাগে না। যেটা লাগে মাশরাফির ক্ষেত্রে, কিন্তু সে জন্য দায়ী তাঁর ক্রমাগত ইনজুরি। ২০০১ সালে অভিষিক্ত মাশরাফির ১০০ উইকেট পেতে সময় লেগেছে ৭ বছর।
তবে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় প্রথম তিনটি জায়গা কিন্তু এই ‘ত্রয়ী’র—মাশরাফি (২৩২), সাকিব (২২৯) ও রাজ্জাক (২০৭)। রুবেল পাঁচে থাকলেও ডাবল সেঞ্চুরিই করতে কত সময় নেবেন কে জানে !