চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দেড় ঘণ্টা অবরোধ
নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে মারা গেছেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবরোধ করে রাখা হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। আজ শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়া সদরের ভূমি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান ভুঁইয়ার নেতৃত্বে পুলিশের অনুরোধে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে গেছে। ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পটিয়া পৌর সদরের বাসিন্দা নুরুল আফসারের ‘আফসার ভিলা’ নামের বাড়ির সীমানা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে গাজী গিয়াসের ‘গাজী কনভেনশন কমিউনিটি সেন্টার’। এই সীমানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৭ জানুয়ারি নুরুল আফসারের বিরুদ্ধে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলার অভিযোগ জানিয়ে গাজী গিয়াস রাত দুইটায় পটিয়া থানায় মামলা করেন। আজ সকাল সাতটার দিকে নুরুল আফসারের স্ত্রী জয়নাব বেগম (৪৫) বাড়ির দোতলা থেকে দেখতে পান, কারা যেন সীমানা আবার তৈরি করছে। এটা দেখে তিনি চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করেন এবং ওই ব্যক্তিদের পরিচয় জানতে চান। ওই সময় ঝগড়াঝাঁটির একপর্যায়ে গাজী কনভেনশন কমিউনিটি সেন্টারের দোতলা থেকে কয়েকজন তাঁর দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
আফসার ভিলায় গিয়ে প্রচুর ইটের টুকরা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
নুরুল আফসারের পরিবার অভিযোগ করেন, জয়নাব বেগমের বুকে ইটের আঘাত লেগে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জয়নাব বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, বুকে আঘাত লাগার কারণেই হয়তো জয়নাব বেগম মারা গেছেন।
এদিকে জয়নাব বেগমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কয়েক শ নারী-পুরুষ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এসে অবস্থান নেন। তাঁরা গাড়ির টায়ারে আগুন লাগিয়ে, বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে, ইট জড়ো করে সড়ক অবরোধ করেন। এতে রাস্তার দুই পাশে প্রচুর যানবাহন আটকে পড়ে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান ভুঁইয়ার নেতৃত্বে পুলিশ অবরোধ সরানোর চেষ্টা করে। বিদ্যুতের খুঁটিগুলো এক পাশ থেকে সরিয়ে ফেললে অন্য পাশে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখার চেষ্টা করেন অবরোধকারীরা। তাঁরা জয়নাব বেগমের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যার অভিযোগ তুলে গাজী গিয়াসের ফাঁসি দাবি করেন। পরে পুলিশের অনুরোধে বেলা দুইটার পর তাঁরা অবরোধ সরিয়ে নিলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।