ডিজিটাল আইনের আটটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আটটি ধারা নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে নিজেদের আপত্তির কথা তুলে ধরেছেন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। এই ধারাগুলোর প্রয়োজনীয় সংশোধনের বিষয়ে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে সংসদের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। প্রস্তাবিত আইনটির খসড়া পর্যালোচনা শেষে আবার গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করা হতে পারে।
২২ মে ২০১৮ (মঙ্গলবার) জাতীয় সংসদে সংসদের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তাবিত এই আইন নিয়ে সাংবাদিক কূটনীতিক, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন পক্ষের আপত্তি ছিল। বিলটি সংসদে ওঠার পর পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
সংসদীয় কমিটির আমন্ত্রণে বৈঠকে পত্রিকার সম্পাদকদের সংগঠন ‘সম্পাদক পরিষদ’, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়।
বৈঠক শেষে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকতার অবাধ বিচরণের ক্ষেত্রে যেসব ধারায় বাধা আসতে পারে, সেগুলোতে আমরা তুলে দিতে বলেছি। তা না হলে আমরা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি; আমরা সাংবাদিকতা রক্ষার জন্য আন্দোলনে যাব, সেটা বলে এসেছি।’
গোলাম সারওয়ার বলেন, তারা সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্য কমিটিকে দিয়েছেন।
সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, তারা মোট আটটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সংজ্ঞায় অস্পষ্টতা ছিল, সেটা জানিয়েছেন। সংসদীয় কমিটি এই দাবির সঙ্গে একমত হয়েছে। যেসব ধারাতে বিন্দুমাত্র স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিরোধক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার বাধা রয়েছে, সেগুলো তারা তুলে ধরেছেন। কমিটিও এ বিষয়গুলো সহানুভূতিশীল ও আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। তারা আশা করছেন, আইনের কয়েকটি বিষয়ে আমূল পরিবর্তন আসবে।
বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। সেখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। গণমাধ্যম যাতে সংকুচিত না হয়, সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যাতে ব্যাহত না হয়, সে কথা তারা বলেছেন। সাংবাদিকেরা যাতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে পারেন; অনুসন্ধান সাংবাদিকতা আর গুপ্তচরবৃত্তি যাতে একসঙ্গে মিলিয়ে না যায়, সেটা বলেছি। আমরা বৈঠকের বিষয়ে খুবই সন্তুষ্ট যে তারা আমাদের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন। তারা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।