অভিযানের তালিকায় মাদক বিরোধীরাও!

বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতার যে তালিকা বিভিন্ন সংস্থা তৈরি করেছে, তাতে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা ব্যক্তিদের নামও স্থান পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদক ব্যবসায়ীদের একেকটি তালিকায় একেকটি নাম ঢুকেছে নানা পরিস্থিতিতে। কারো নাম ঢুকেছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দ্বারা। আবার মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্সদের মাধ্যমে অনেকের নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে। এর পেছনে অর্থনৈতিক লেন-দেনের অভিযোগ উঠেছে।

কক্সবাজারের টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সেখানকার কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার পর এসব বিষয় এখন সামনে চলে আসছে। একরামুলের নাম মাদক ব্যবসায়ীদের তিনটি তালিকায়ই ছিল। কিন্তু নিহত হওয়ার কয়েকদিন আগেও তিনি মাদকের ডেরা জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

একরামের ঘটনাপ্রবাহসহ বেশ কিছু অভিযোগ নজরে আসার পর ইতোমধ্যে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে সব রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় তালিকা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত না হয়ে কাউকে মাদকের ঘটনায় গ্রেপ্তার না করতে বলা হয়েছে। শিগগিরই পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়কারীর একটি হালনাগাদ তালিকা তৈরি করতে যাচ্ছে। যে তালিকা কয়েক দফা যাচাই-বাছাই করে প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ঢাকার সবুজবাগ থানা এলাকার মাদকবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেছেন, ‘বাসাবো ওহাব কলোনির মাদক ব্যবসায়ী শোভাসহ এ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমি প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে আসছি। মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও র‌্যালি করছি। এসব করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় মাদক ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে হত্যার হুমকি পেয়েছি। অথচ আমার নামই পুলিশের মাদক তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। তারা দেখুক আমি মাদক ব্যবসায় জড়িত কিনা।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলেছে, একাধিক তালিকা হাতে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত ১৫ মে থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান শুরু করে। গতকাল পর্যন্ত এ অভিযানে ১৩৫ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। আর গ্রেপ্তার হয়েছে ১২ হাজার মানুষ। এদের একটি বড় অংশই মাদক ব্যবসায় সরাসরি জড়িত।

গত ২৬ মে টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তার মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন মহল ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছেন একরামুল হককে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। একরাম নিহত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তের চারটি অডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে ৪-৫ দিন ধরে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা কমে গেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ