গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরানকে ছেড়ে দিয়েছে র্যাব
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : শাহবাগ থেকে ধরে নেওয়ার সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে ছেড়ে দিয়েছে র্যাব।
৬ জুন ২০১৮ (সোমবার) রাত সোয়া ১১টার দিকে ইমরানকে ছেড়ে দেওয়ার বষয় নিশ্চিত করেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ এমরানুল হাসান।তিনি শুধু বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১১টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
র্যাব-৩ এর একটি দলই ইমরানকে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ধরে নিয়েছিল।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে গণজাগরণ মঞ্চের একজন সংগঠক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ইমরান ভাই ছাড়া পেয়েছেন। তিনি এখন বাসার দিকে যাচ্ছেন।”
মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের’ প্রতিবাদে শাহবাগে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে উপস্থিত হলে ইমরানকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল র্যাব। তখন পেটানো হয় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদেরও।
গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক রিয়াজুল আলম ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিকাল সাড়ে ৪টায় ইমরান শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আসেন।
“তিনি গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে র্যাব সদস্যরা জোর করে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।”
ইমরানকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করে র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “সরকারি কাজে বাধা, বিনা অনুমতিতে জনসমাবেশ করাসহ বেশ কয়েকটি কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন সে র্যাব-৩ এর হেফাজতে আছে। তাকে কোথায় হস্তান্তর করা হবে- সেই সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।”
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসানও তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “ইমরানের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
তবে ছেড়ে দেওয়ার পর এসব বিষয়ে আর কিছুই বলেননি এই র্যাব কর্মকর্তারা।
আটকের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক সঙ্গীতা ইমাম বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ‘মাদক নির্মূলের নামে ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে’ জাদুঘরের সামনে ছাত্র ইউনিয়নের আরেকটি মানববন্ধন চলছিল।
“ওই সময় গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে পাবলিক লাইব্রেরির ভেতর দিয়ে জাদুঘরের দিকে আসছিলেন ইমরান। তখন সাদা পোশাকের সাত-আটজন এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়।”
গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মী এ সময় বাধা দিতে গিয়ে পোশাকধারী র্যাব সদস্যদের পিটুনির শিকার হন।
সঙ্গীতা ইমাম বলেন, “আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে প্রতিবাদ করতে চেয়েছি। কিন্তু তা পারিনি। যেখানে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ারের মতো বিষয় নিয়ে জাতিসংঘের মতো সংস্থা কথা বলছে, সেটা আমরা রাষ্ট্রের নাগরিক হয়ে পারছি না। তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।”
ইমরানকে ধরে নেওয়া এবং নেতা-কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনও ডেকেছিল গণজাগরণ মঞ্চ। ছাত্র ইউনিয়নও এক বিবৃতিতে ইমরানের মুক্তির দাবি জানিয়েছিল।