এমপি একরাম চৌধুরীর ছেলে শাবাবই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন!
মনির হোসেন মিন্টু, বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়িচাপা দিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় দায়ী গাড়িটিকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটির নম্বর ঢাকা মেট্রো ১৩-৭৬৫৫। আর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিতে (বিআরটিএ) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাড়িটির মালিক কামরুন্নাহার শিউলি। তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করীম চৌধুরীর স্ত্রী ও নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার চেয়ারম্যান।
তবে ওই দুর্ঘটনার পর গাড়িটি দ্রুত এসে সংসদ ভবনের উল্টো দিকের ন্যাম ফ্ল্যাটে যখন ঢোকে তখন সেটিকে অনুসরণ করেন একজন মোটরসাইকেল আরোহী ও আরেকজন প্রাইভেট কার আরোহী। তারা জানিয়েছেন, গাড়িটি ওই ভবনে ঢোকার পর একজন তরুণ গাড়িটি থেকে নামেন। ভবনটির আনসার ও প্রহরীরা জানিয়েছেন, ওই তরুণের নাম শাবাব চৌধুরী। তিনি কামরুন্নাহার শিউলি ও সংসদ সদস্য একরাম চৌধুরীর একমাত্র ছেলে। গাড়িটি তিনিই চালাচ্ছিলেন।
১৯ জুন ২০১৮ (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে দশটার দিকে মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপরে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি প্রাইভেট কার এক ব্যক্তিকে চাপা দিয়ে দ্রুত বিজয় সরণির দিকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সেলিম ব্যাপারী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়। কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মোহাম্মদ শামীম হোসেন এবিসিনিউজবিডিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতেই কাফরুল থানায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর-১৮। মামলার এজাহারেও গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো গ ১৩-৭৬৫৫ উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন চন্দ্র কর্মকার।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন শামীম আশরাফী এই প্রতিবেদককে বলেন, দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে তখন ওই প্রাইভেট কারটির পেছনে ছিলেন একজন মোটরসাইকেল আরোহী। দ্রুত পালানো গাড়িটিকে ওই মোটরসাইকেল আরোহী অনুসরণ করা শুরু করেন এবং চিৎকার করে আশপাশের সবার সহযোগিতা চান। এ সময় কয়েকজন বন্ধুসহ তিনিও (শামীম) একটি প্রাইভেট কারে ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেল আরোহীর চিৎকার শুনে তাদের প্রাইভেট কারটিও ঘাতক গাড়িটিকে অনুসরণ করে। তারা দেখতে পান গাড়িটি সংসদ ভবনের উল্টো পাশে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অবস্থিত ন্যাম ফ্ল্যাটের ভেতরে গিয়ে ঢোকে। ওই মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে তারাও ন্যাম ভবনের ভেতরে ঢোকেন। এমপি পুত্র কয়েকজনকে নিয়ে তাদের মারধরও করেন।
ঘটনাটি কাফরুল থানাকে জানালে কর্তব্যরত পুলিশরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। পুলিশ এ ঘটনার পর মামলা নিলেও গাড়ী এবং গাড়িচালক এমপি পুত্রকে আটকের কোন উদ্যোগ নেয়নি।