জাতিসংঘের আশা ত্যাগ যুক্তরাষ্ট্রের
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ কথিত রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়া সরকারকে দায়ী করে দেশটিতে শাস্তিমূলক হামলার পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, আর এ হামলার জন্য জাতিসংঘের অনুমোদন চাইবে না যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার সিরিয়া বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা পরিত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
এ জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ জানিয়ে বলেছে, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদকে জিম্মি করে রেখে মিত্র সিরিয়াকে নিরপরাধ শিশুদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে।
২১ অগাস্ট সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের শহরতলী এলাকায় দেশটির বাশার আল আসাদ সরকার বিদ্রোহীদের দমনে বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো। এ হামলায় শিশুসহ ১৪’শরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবী যুক্তরাষ্ট্রের।
বিষয়টির তদন্তে নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল এখানো তাদের অনুসন্ধানের ফলাফল প্রকাশ করেনি। জাতিসংঘের তদন্ত ফলাফল প্রকাশের পর নিশ্চত হয়ে সিরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র। কিন্তু এ বিষয়ে জাতিসংঘের সাড়ার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সামান্থা পাওয়ার বলেছেন, সিরিয়ার রাসায়নিক হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর আহ্বান জানিয়ে গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র বরাবর যুক্তরাজ্য যে খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছিল, তার মৃত্যু হয়েছে।
সামান্থা বলেন, “আমি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। যুক্তরাজ্য প্রস্তাবটি উত্থাপন করল। কিন্তু বৈঠকের সামগ্রিক মেজাজে বোঝা যাচ্ছিল প্রস্তাবটি গৃহীত হবে না, অবশ্যই রাশিয়ার জন্য।”
“জেনেভায় আড়াই বছরের শান্তি আলোচনার পর এবং রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়টি সুরাহা করার জন্য কয়েক মাস চেষ্টার পর আমাদের উপলব্ধি, সিরিয়ার মানবিক বিপর্যয় এড়ানোর পথে নিরাপত্তা পরিষদের সামনে কোনো কার্যকর রাস্তা নেই।”
নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন স্থায়ী পাঁচটি সদস্য রাষ্ট্র হল চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়ার আসাদ সরকারকে শাস্তি দিতে যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পিত সিরিয়া হামলায় প্রস্তাব সম্বলিত খসড়া প্রস্তাব দেশগুলো বরাবর পেশ করেছিল যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার বিরোধীতায় প্রস্তাবটি খারিজ হয়ে যায়।
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের কোনো একটি কোনো প্রস্তাবের বিপক্ষে ‘ভেটো’ (আমি মানি না) দিলে তা আর গৃহীত হয় না।
সামান্থার এ বক্তব্যের পর বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, সিরিয়ায় হামলা চালাতে জাতিসংঘের অপেক্ষায় থাকবে না যুক্তরাষ্ট্র।