গুলশানে জঙ্গি হামলা, অভিযুক্ত ২২
বিশেষ প্রতিবেদক, এবিসিনিউজবিডি,
ঢাকা : গুলশানের হলি আর্টিসানে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২২ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিচ্ছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের তদন্ত দল। তবে এই অভিযোগপত্রে থাকছে না হাসনাত করিমের নাম। ৩০ জুন ২০১৮ এ তথ্য জানা গেছে।
তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, হামলায় হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অভিযোগপত্রে তার নাম নাও থাকতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদনে সেই রাতে (১ জুলাই) রেস্টুরেন্টের ভেতর জঙ্গিদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলাসহ তার সন্দেহজনক ভঙ্গিমা ‘পরিস্থিতির শিকার’ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘হামলার ঘটনায় অস্ত্রদাতা, জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা ও অর্থ বিনিয়োগকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের অভিযুক্ত করে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে।’ তবে চার্জশিটে কার কার নাম থাকছে সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
২০১৬ সালের ১ জুলাই আর্টিসানে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জন নিহত হন। জীবিত জিম্মিদের উদ্ধারে ২ জুলাই হলি আর্টিসানে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নিহত হন ছয় জঙ্গি। অভিযানে এক জাপানি ও দু’জন শ্রীলঙ্কানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার পর ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে।
সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-বোমা সংগ্রহ, সমন্বয়, জঙ্গিদের আশ্রয়দাতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ২২ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগপত্রে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ২২ জনের মধ্যে হামলায় অংশগ্রহণকারী পাঁচ জঙ্গিসহ ১৪ জন নিহত হয়েছে। মামলার সাত আসামি কারাগারে এবং দু’জন পলাতক রয়েছে।
সিটিটিসি আরও জানায়, গুলশান হামলার রাতে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর দায় স্বীকার করলেও তদন্তে আইএস’র অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। হামলাকারীদের দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী ‘নব্য জেএমবি’র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যা থাকছে অভিযোগপত্রে
গুলশান হামলার অভিযোগপত্রে যে ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১৪ জন গুলশানসহ বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় পরিচালিত অভিযানে নিহত হয়েছে। তারা হলেন- তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
বাকি পাঁচজন সেনাবাহিনীর অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হন। তারা হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
কারাগারে থাকা সাত আসামি হচ্ছেন- রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ ও আবদুস সামাদ ওরফে মামু। এছাড়া পলাতক দুই আসামি হলেন- শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন।