ফেলানীর স্বজনরা হতাশ
রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কুড়িগ্রামঃ ফেলানী হত্যা মামলার রায়ে হাবিলদার অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়ার খবরে হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তার স্বজনরা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফের বিশেষ আদালত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যা মামলার রায় দেয়, যাতে অভিযুক্ত বিএসএফের হাবিলদার অমিয় ঘোষকে ‘নির্দোষ’ বলা হয়।
চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এই রায় বাহিনীর মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিএসএফ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রায়ের খবর শুনে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, “ভারতে ‘সাক্ষী’ দিয়া আইসা আশা করছি বিচার পামু। কিন্তু এ কেমুন বিচার বুঝলাম না। মেয়েডারে চোখের সামনে পাখির মতন মারল তার কোনো বিচার হইলো না।”
মেয়ে হত্যার বিচার নিয়ে তিনি আর্ন্তজাতিক আদালতে যেতে চান এবং এ কাজে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, “আমার নির্দোষ মাইয়াডারে যে খুন করছে তার ফাঁসি চাইছিলাম। কিন্তুক বিচারের নামে হেরা তামাশা করল। ভারত সরকার আমাদের সাথে বেইমানি করেছে।”
ফেলানীর মামলার শুনানিতে অংশ নেয়া বাংলাদেশের আইনজীবী কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন বলেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার ভুলুণ্ঠিত হয়েছে। হত্যাকারীর বিচারের মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তা তিরোহিত হল।
এ রায় বহাল থাকলে আগামীতে সীমান্ত এলাকায় মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বিএসএফের কাছে মামলার রায়ের ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগ করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কিশোরী ফেলানী ভারত থেকে বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রামে আসার পথে অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারের বেড়ায় পাঁচ ঘন্টা ঝুলেছিল।
এ ছবি সংবলিত সংবাদ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়। হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি ওঠে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে।
এ বছরের গত ১৩ অগাস্ট কোচবিহারের সোনারী এলাকায় বিএসএফের বিশেষ আদালতে এ হত্যার বিচার শুরু হয়।
গত ১৯ অগাস্ট আদালতে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ সাক্ষ্য দেন। এ বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন।